নয়া দিল্লি: জাতীয় তদন্ত সংস্থা' NIA (National Investigation Agency) বাংলাদেশের কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা দায়ের করেছে।
মামলাটি চেন্নাইয়ের এক মহিলাকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে, যেখানে 'লাভ জিহাদ' (Love Jihad)এর মত ঘটনা সামনে এসেছে। ২০২০ সালের ২১শে মে, পীড়িতার বাবা চেন্নাই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপরে জুলাইয়ে এই মামলাটি এনআইএ-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পীড়িতা উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডনে গিয়েছিল। সেই সময় বাংলাদেশি নাগরিক নাফিজ তাকে প্রলুব্ধ করতে শুরু করে। সে মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে (Relationship) আসার জন্য ফাঁদ পেতে ছিল।
এই কাজের মধ্যে অভিযুক্তের বাবা সরদার শেখাওয়াত হুসেনের পাশাপাশি ইয়াসির ও নোমন আলি খান নামে আরও দুজন জড়িত ছিল। অভিযোগ করা হয়েছে যে নাফিস এদের সহযোগিতায় পীড়িতাকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে মহিলাকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হয়। এর সাথে তাকে ঘরে আটকে রাখা হয়, যাতে সে তার সাথে হওয়া অত্যাচারের কথা কাউকে বলতে না পারে। কিন্তু মহিলা কোনও রকম ভাবে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় এবং তার বাবা-মাকে জানায় যে বাংলাদেশে তাকে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে এবং তাকে প্রতিনিয়ত প্রতারণার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
পীড়িতার বাবা চেন্নাই এর রায়পুরামের এক ব্যবসায়ী। কয়েক বছর আগে তিনি উত্তর ভারত থেকে চেন্নাই এ পাড়ি জমান। মেয়ের ফোন করার পরে তিনি নাফিসের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তার মেয়েকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু নাফিস বিনিময়ে টাকার দাবি করলে তিনি চেন্নাই পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর এই মামলা সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ (CCB)-র হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে সিসিবি(CCB) ডাইরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ জে কে ত্রিপাঠির মাধ্যমে তামিলনাড়ু সরকারকে এই মামলাটিকে দিল্লিতে অবস্থিত এনআইএ(NIA)কে ট্রান্সফার করার জন্য অনুরোধ করে। এর পরে কেন্দ্র তামিলনাড়ু সরকারের কাছ থেকে নাফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করে। নাফিসের বিরুদ্ধে ভারতীয় মহিলাকে অপহরণ করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলায় NIA দ্বারা IPC -র ধারা 120 B (ষড়যন্ত্র), 294(B)(প্রতারিত করা), 363(কোন ভারতীয় নাগরিক কে অপহরণ), 364 A (কোন ব্যক্তিকে অপহরণ করে তাকে আটক করা), 368(ইচ্ছাকৃতভাবে কোন অপহৃতব্যক্তি কে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা), ৩৭০(মানব পাচার- দাস রূপে কোন ব্যক্তিকে কেনা বেচা) ধারা ৩৮৪ (বলপূর্বক চাঁদা আদায়) এবং ৫০৬ (i) (অপরাধীকে ভয় দেখানো), এর আওতায় মামলা করা হয়েছে।
এ মামলার সঙ্গে জাকির নায়েক লিঙ্ককেরও তদন্ত করা হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে একটি সংগঠিত বাংলাদেশী গ্রুপ থাকতে পারে, যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত রয়েছে। এজন্য জাকির নায়েককেও এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নাফিসের সম্বন্ধে জানতে পারা গেছে যে সে বাংলা দেশের এক প্রাক্তন সাংসদের ছেলে, তাই এ ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগ অস্বীকার করা যায় না।
ভারতীয় হিন্দু মহিলাদের সাথে দেশে ও বিদেশে 'লাভ জিহাদ' এর মামলা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি কানপুর থেকে শালিনী যাদব নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে, যে মোহম্মদ ফয়সালকে বিবাহের পরে ইসলাম গ্রহণ করে। সে যে জুহি কলোনীতে ছিল, সেখানে অনেক যুবতীকে মুসলিম যুবকরা 'লাভ জিহাদ' এর শিকার করেছে। মোহাম্মদ ফয়সালও শালিনীর পাশের কলোনীতে থাকতো।
কানপুর এলাকায় গত ২ মাসে পাঁচ জন মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এই পাঁচ জন মেয়ে এবং তারা যার সাথে পালিয়েছিল তাদের পালানোর বিষয়ে একটি মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে কীভাবে জুহি কলোনি এখন 'লাভ জিহাদ'-এর ঘাঁটি হয়ে উঠেছে এবং এখানকার মেয়েদের এর শিকার বানানো হয়।
আশঙ্কা করা হচ্ছে যে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা পলাতক মেয়েদের সঠিকভাবে তদন্ত করা হলে সংখ্যাটি অনেক হবে এবং সমস্ত অপরাধী দের তার জুহি কলোনির সাথে যুক্ত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.