আমাদের মস্তিস্ক চেতনার সাগর। তা থেকে মেরুদণ্ডের হাড়ের মধ্য দিয়ে বটের নালের মত সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal Cord) যা ইড়া পিঙ্গলা সুষুম্নার সমন্বিত রূপ মেরুদণ্ডের সর্বনিম্ন ক্ষেত্র পর্যন্ত বিস্তৃত। ওই শেষ প্রান্তেই জীবচৈতন্য অধিষ্ঠান করে কুলকুণ্ডলিনী শক্তিরূপে।
এই স্থানের নামকরণ করা হল— মূলাধার, শক্তির মূলকেন্দ্র। শক্তির এই নিম্নগামিতার জন্য জীবজগৎ দেহের নিম্নাঙ্গের তৃপ্তি লাভে সদা বিব্রত। পেটের জ্বালা আর লিঙ্গের জ্বালা মেটাতে সবাই সদাব্যস্ত এবং তারই জন্য সমাজে যত অশান্তি, অসাম্য, দুর্নীতি, ব্যভিচার, খুন খারাপি, রাহাজানি, লড়াই, সংগ্রাম।
বেদজ্ঞ ঋষিরা দেখলেন— আমাদের এই চৈতন্যসত্তাকে— কুলকুণ্ডলিনী শক্তিকে জাগ্রত করে যদি উর্ধ্বগামী করা যায়, তাহলে এই সব অশান্তি থেকে আমরা রেহাই পেতে পারি। তারই জন্য দিলেন মন্ত্র। মন্ত্রের ধ্বনিতে ধ্বনিতে এই দেহবীণাযন্ত্র নিনাদিত করতে বললেন— যাতে মহাকাশের মহাসুরের সাথে আমরা একাত্ম হতে পারি— মস্তিষ্কের চেতনার সাগরে সহস্রদল পদ্মের মত বিকশিত হতে পারি।
মস্তিষ্ক থেকে মেরুদণ্ডের সর্বনিম্নস্থান পর্যন্ত বিস্তৃত এই যে চৈতন্যকাণ্ড, বেদজ্ঞ ঋষিরা এখানে সাতটি চক্রের (গাঁটের) অধিষ্ঠান নির্ণয় করলেন :
(১) মূলাধার— পায়ুস্থানে অবস্থিত। একে বলা হল পৃথীক্ষেত্র।
(২) স্বাধিষ্ঠান— লিঙ্গস্থলে অবস্থিত। একে বলা হল বরুণ ক্ষেত্র।
(৩) মণিপুর— নাভিস্থলে অবস্থিত। একে বলা হল অগ্নিক্ষেত্র।
(৪) অনাহত— হৃদক্ষেত্রে বা বক্ষস্থলে অবস্থিত। একে বলা হল বায়ুক্ষেত্র।
(৫) বিশুদ্ধ— কণ্ঠস্থলে অবস্থিত। একে বলা হল আকাশক্ষেত্র।
(৬) আজ্ঞা— দুই ভ্রুর মধ্যে অবস্থিত। একে বলা হল মনক্ষেত্র।
(৭) সহস্রার— মস্তিষ্কে অবস্থিত। একে বলা হল চৈতন্যক্ষেত্র।
আরোও পড়ুন : 'গারসি' বা 'গাস্বী' ব্রত কী? কখন এই ব্রত পালন করা হয়?
প্রতিক্ষেত্রে অসংখ্যা গ্ল্যান্ড আছে, যার অধিকাংশই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে। সাধনার মাধ্যমে, জপ-ধ্যানের প্রক্রিয়ায় এই চক্রগুলিকে যদি জাগ্রত করা যায়, সেই সেই গ্লাণ্ডের ফুরণ হয়। তার ফলে একদিকে যেমন অসীম আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হতে পারে মানুষ, তেমনি তার সুন্দরতম রূপের বিকাশ ঘটতে পারে, ব্যক্তি-প্রেমের পরিবর্তে বিশ্ব-প্রেম জাগতে পারে।
আখের যেমন গাঁট থাকে এবং সেই গাট উত্তীর্ণ হলে যেমন পরবর্তী ক্ষেত্রের রসাস্বাদন করা যায়, তেমনি এক একটা চক্র ভেদ করতে পারলে সেই সেই ক্ষেত্রের গুণগুলি আমরা আয়ত্ত করতে পারব। যদিও এই চক্র ভেদ করতে সাধারণ সাধকের জন্ম জন্ম কেটে যায়।
আমাদের স্বরূপ সত্তাকে জানতে গেলে, পরম চৈতন্যের সাথে একাত্ম হতে গেলে এই সপ্তচক্রের সপ্তদ্বার আমাদের পার হতে হবে। তার জন্য অহর্নিশ রেওয়াজ করতে হবে সেই মন্ত্র-ধ্বনির, নাম-ধ্বনির যা সিদ্ধগুরু আমাদের দান করেন স্বরলিপির মত।
প্রতিক্ষেত্রে অসংখ্যা গ্ল্যান্ড আছে, যার অধিকাংশই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে। সাধনার মাধ্যমে, জপ-ধ্যানের প্রক্রিয়ায় এই চক্রগুলিকে যদি জাগ্রত করা যায়, সেই সেই গ্লাণ্ডের ফুরণ হয়। তার ফলে একদিকে যেমন অসীম আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হতে পারে মানুষ, তেমনি তার সুন্দরতম রূপের বিকাশ ঘটতে পারে, ব্যক্তি-প্রেমের পরিবর্তে বিশ্ব-প্রেম জাগতে পারে।
আখের যেমন গাঁট থাকে এবং সেই গাট উত্তীর্ণ হলে যেমন পরবর্তী ক্ষেত্রের রসাস্বাদন করা যায়, তেমনি এক একটা চক্র ভেদ করতে পারলে সেই সেই ক্ষেত্রের গুণগুলি আমরা আয়ত্ত করতে পারব। যদিও এই চক্র ভেদ করতে সাধারণ সাধকের জন্ম জন্ম কেটে যায়।
আমাদের স্বরূপ সত্তাকে জানতে গেলে, পরম চৈতন্যের সাথে একাত্ম হতে গেলে এই সপ্তচক্রের সপ্তদ্বার আমাদের পার হতে হবে। তার জন্য অহর্নিশ রেওয়াজ করতে হবে সেই মন্ত্র-ধ্বনির, নাম-ধ্বনির যা সিদ্ধগুরু আমাদের দান করেন স্বরলিপির মত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.