পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হত্যা অব্যাহত। দলের কর্মসূচিতে বেরিয়ে মারধরে মৃত্যু হল এক বিজেপি কর্মীর।
শনিবার বিকেলে উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের এই ঘটনায় বিজেপির অভিযােগের তীর তৃণমূলের দিকে।ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এই ঘটনায় তৃণমূলের গুন্ডাদের অভিযুক্ত করেছেন। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের সাফ দাবি, বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পাড়ার লােকের ঝামেলা বাধে। তার পরেই এই ঘটনা। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।
বিজেপি অধিক সংখ্যক মানুষের সাথে যোগাযোগ ও সংবাদ আদান প্রদানের জন্য এই অভিযান শুরু করেছিল। এটি পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে 'আর নয় অন্যায়' এরই একটি অংশ।
পুলিশ জানায়, নিহত যুবকের নাম সৈকত ভাওয়াল (৩২)। (Saikat Bhawat) তিনি হালিশহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির বুথ কমিটির সভাপতি। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় ঠাকুর বলেন, “পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। কী থেকে গােলমাল, প্রাথমিক তদন্ত শেষ না হলে বলা যাবে না।”
দুদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা জে পি নাড্ডার গাড়িতে হামলার ঘটনায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এই আবহেই বিজেপি কর্মীর পিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
Another day, another murder! Saikat Bhawal, BJP worker from Halisahar was brutally murdered by TMC goons while 6 others are critically injured and fighting for their lives. He was targeted during BJP’s door to door outreach “Aar Noi Annay”.
— BJP Bengal (@BJP4Bengal) December 12, 2020
Pishi can’t retain power like this! pic.twitter.com/zA7BeDm7aC
বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তন্ময় আইচ জানান, এ দিন বিকেলে তাঁদের 'গৃহসম্পর্ক যাত্রা অভিযান’ (Door to door) ছিল হালিশহরের ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর দাবি, বারেন্দ্ৰগলি এলাকায় যখন বিজেপির কর্মীরা বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করছিলেন, সে সময়ে তৃণমূলের প্রায় শ'খানেক লােক চার দিক থেকে ঘিরে ধরে। বিনা প্ররােচনায় লাঠি-রড দিয়ে শুরু হয় মার।
তন্ময়ের বক্তব্য, “আমাদের সাত জন গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ নিজেদের গাড়িতে করে জখমদের কল্যাণীর JNM হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই সৈকতকে মৃত ঘােষণা করা হয়। ওঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে।” জখম ছজন ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিয়ে হয়েছিল সৈকতের। এই ঘটনায় তাঁর বাড়ির লােকজন হতবাক। এমনিতেই দীর্ঘ দিন ধরে হালিশহরে রাজনৈতিক উত্তেজনা
রয়েছে। এ দিন গােলমালের সময়ে মানুষ আতঙ্কে ছােটাছুটি শুরু করে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
সন্ধের পরে হাসপাতালে যান বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। তিনি বলেন, “হিংসার বদলে হিংসার কথা আমি বলতে পারি না। তবে বদলা হবেই। মানুষের সমর্থন হারিয়ে তৃণমূল হিংসার মাধ্যমে এলাকা দখল করতে চাইছে।”
নৈহাটির বিধায়ক, তৃণমূলের পার্থ ভৌমিক বলেন, “এটা নেহাতই পাড়ার গােলমাল বলে জেনেছি। বিজেপির মিছিল থেকে প্ররােচনা ছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে গোলমাল বাধে। এর মধ্যে আমাদের দলের কেউ ছিল না। বিজেপি এটা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।দোষীদের যাতে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হয়, সে জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছি।” হামলার ঘটনার কিছুক্ষণ পরে কিছু লােক আবার স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজা দত্তের বাড়ি ঘিরে ফেলে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.