চীনে উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকদের উপর নৃশংসতার একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে।
সায়রাগুল সৌতবায়ের (Sayragul Sautbay)-র মতে, চীন তাদের শুয়োরের মাংস খেতে বাধ্য করে। জুমরেত দাউতের অভিজ্ঞতাও একই রকম। দুজনেই উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকদের জন্য নির্মিত প্রতারণা শিবিরে থেকেছেন। চীন এটিকে রি-এডুকেশন ক্যাম্প বলে।
সায়রাগুল সৌতবায় দুবছর আগে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে একই রকম রি-এডুকেশন শিবির থেকে ছাড়া পেয়েছিল। কিন্তু তিনি এখনও শিবিরে অত্যাচার ও নির্যাতনের কথা ভোলেন নি।
সায়রাগুল বর্তমানে সুইডেনে থাকেন এবং পেশায় একজন চিকিৎসক এবং শিক্ষাবিদ। তিনি সম্প্রতি একটি বই প্রকাশ করেছেন, যাতে তিনি শিবিরের মধ্যে নৃশংসতা, শারীরিক শোষণ ও জোর করে বন্ধ্যাত্মকরণের বিষয়ে বিশদ উল্লেখ করেছেন।
আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন চীনে উইঘুররা কতটা অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল তাদের জোর করে শুকরের মাংস খাওয়ানো হচ্ছে, যা ইসলামে নিষিদ্ধ।
সায়রাগুল বলেছেন, "প্রতি শুক্রবার আমরা শুয়োরের মাংস খেতে বাধ্য হতাম। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই দিনটি বেছে নিয়েছিল, কারণ এই দিনটি মুসলমানদের কাছে পবিত্র দিন হিসাবে মানা হয়। কেউ তা প্রত্যাখ্যান করলে তাকে নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়। "
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে চীন সরকার উইঘুরদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসে আঘাত হানার জন্য সব ধরণের কৌশল অবলম্বন করছে। ২০১৭ সাল থেকে চীন সরকার তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে আসছে এবং তথাকথিত 'কট্টরপন্থী' কে শেষ করার নামে এই জাতীয় শিবিরকে ন্যায্যতা দিয়েছে।
অন্যদিকে, জার্মানি মানব বিজ্ঞানী (Anthropologist) এবং উইঘুর বিশেষজ্ঞ অ্যাড্রিনা জোন্স বলেছেন যে এই নীতিটি 'ধর্ম নিরপেক্ষীকরণ' (Secularisation) এর একটি অংশ।
অ্যাড্রিনার মতে দলিল এবং সরকার অনুমোদিত নিয়মে সক্রিয় প্রচেষ্টা চলছে উইঘুর এলাকায় 'পিগ ফার্মিং' কে অগ্রাধিকার দিতে। নভেম্বর ২০১৯-এ জিনজিয়াংয়ের প্রশাসক সোহরত জাকির বলেছিলেন যে অঞ্চলটিকে একটি 'পিগ রেঞ্জিং হাব' এ রূপান্তরিত করা হবে।
অন্যদিকে, জার্মানি মানব বিজ্ঞানী (Anthropologist) এবং উইঘুর বিশেষজ্ঞ অ্যাড্রিনা জোন্স বলেছেন যে এই নীতিটি 'ধর্ম নিরপেক্ষীকরণ' (Secularisation) এর একটি অংশ।
অ্যাড্রিনার মতে দলিল এবং সরকার অনুমোদিত নিয়মে সক্রিয় প্রচেষ্টা চলছে উইঘুর এলাকায় 'পিগ ফার্মিং' কে অগ্রাধিকার দিতে। নভেম্বর ২০১৯-এ জিনজিয়াংয়ের প্রশাসক সোহরত জাকির বলেছিলেন যে অঞ্চলটিকে একটি 'পিগ রেঞ্জিং হাব' এ রূপান্তরিত করা হবে।
Read more: উইঘুর মহিলাদের মাথা ন্যাড়া করে চুল বিক্রি করছে চীন, সেখানে নরসংহারের মতো কিছু ঘটছে: আমেরিকা।
এই বছরের মে মাসে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল যাতে বলা হয়েছিল যে দক্ষিণ কাশগার (Kashgar) অঞ্চলে একটি প্রকল্প শুরু হচ্ছে, যার সহায়তায় বছরে ৪০ হাজার শূকর উৎপাদন করা হবে।
এই যোজনা এই বছরের এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ করা হয়েছে যা রমজান মাসের প্রথম দিন। এই অঞ্চলে উৎপাদিত শুয়োরের মাংস রফতানি করা হবে না, বরং তা কাশগার অঞ্চলেই খাওয়া হবে।
এই পুরো অঞ্চলের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বসতি উইঘুর সম্প্রদায়ের। অ্যাড্রিনা বলেছেন, "এটি জিনজিয়াং প্রদেশের মানুষের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক আস্থাকে পুরোপুরি শেষ করার প্রয়াস।" এর লক্ষ্য উইঘুরদের ধর্ম- নিরপেক্ষ করা এবং চীনের বামপন্থী দলকে অনুসরণ করানো যাতে তারা সম্পূর্ণ রূপে নাস্তিক হয়ে যায়। "
প্রায় সায়রাগুলের মতো অভিজ্ঞতা ছিল উইঘুর মুসলিম মহিলা ব্যবসায়ী জুমরেত দাওয়ুতেরও(Zumret Dawut)। তাঁকে উরুমকি শহর থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গ্রেফতারের দুমাস পরে আধিকারিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করতেন যে পাকিস্তানের সাথে তাঁর কী সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও তারা আরও জিজ্ঞেস করতেন যে তাঁর কয়টি সন্তান রয়েছে এবং সেই সন্তানরা ইসলাম পড়াশোনা করেছে বা কুর-আন পড়েছে কিনা।
তিনি জানান ওনাকে শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য শিবিরের পুরুষ আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করতে হয়েছিল এবং পুরুষ আধিকারিকরা শৌচাগার পর্যন্ত তাঁর পিছু নিয়েছিল।
তিনি আরোও বলেছেন, "কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে থাকার সময় আমরা কী খাব এবং কী খাবনা না তা আমরা ঠিক করতে পারতাম না।" আমাদের বাঁচার জন্য পরিবেশন করা শুয়োরের মাংসও খেতে হয়েছিল। "
চীনের জিনজিয়াং সরকার প্রদেশের মানুষের জন্য 'ফ্রি ফুড' নামে একটি অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের আওতায় অল্প বয়স্ক মুসলিম বাচ্চাদের তাদের অজান্তেই পরিবেশন করা হয়েছিল শূয়োরের মাংস। এর লক্ষ্য ছিল বাচ্চারা অল্প বয়স থেকেই হালাল মাংস খেতে আসক্ত হয়ে পড়ে।
তুর্কি বংশোদ্ভূত উইঘুর মানবাধিকার কর্মী আরসলান হিদায়াত বলেছেন, শুয়োরের মাংস খাওয়া থেকে শুরু করে মদ্য পান করা পর্যন্ত, চীন সরকার ইসলামে হারাম বলে বিবেচিত সব কিছুকেই স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। চীন সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে মুসলমানরা শুকরের মাংস খায় এবং রমজানে রোজা না রাখে।
এই বছরের মে মাসে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল যাতে বলা হয়েছিল যে দক্ষিণ কাশগার (Kashgar) অঞ্চলে একটি প্রকল্প শুরু হচ্ছে, যার সহায়তায় বছরে ৪০ হাজার শূকর উৎপাদন করা হবে।
এই যোজনা এই বছরের এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ করা হয়েছে যা রমজান মাসের প্রথম দিন। এই অঞ্চলে উৎপাদিত শুয়োরের মাংস রফতানি করা হবে না, বরং তা কাশগার অঞ্চলেই খাওয়া হবে।
কারাগারের আশেপাশের ৯০ শতাংশই বাসিন্দাই উইঘুর মুসলিম:
প্রায় সায়রাগুলের মতো অভিজ্ঞতা ছিল উইঘুর মুসলিম মহিলা ব্যবসায়ী জুমরেত দাওয়ুতেরও(Zumret Dawut)। তাঁকে উরুমকি শহর থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গ্রেফতারের দুমাস পরে আধিকারিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করতেন যে পাকিস্তানের সাথে তাঁর কী সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়াও তারা আরও জিজ্ঞেস করতেন যে তাঁর কয়টি সন্তান রয়েছে এবং সেই সন্তানরা ইসলাম পড়াশোনা করেছে বা কুর-আন পড়েছে কিনা।
তিনি জানান ওনাকে শৌচাগারে যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার জন্য শিবিরের পুরুষ আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করতে হয়েছিল এবং পুরুষ আধিকারিকরা শৌচাগার পর্যন্ত তাঁর পিছু নিয়েছিল।
তিনি আরোও বলেছেন, "কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে থাকার সময় আমরা কী খাব এবং কী খাবনা না তা আমরা ঠিক করতে পারতাম না।" আমাদের বাঁচার জন্য পরিবেশন করা শুয়োরের মাংসও খেতে হয়েছিল। "
শিশুকাল থেকে হারাম শূয়োরের মাংস খাবারে অভ্যস্থ করা হয় মুসলিমদের:
চীনের জিনজিয়াং সরকার প্রদেশের মানুষের জন্য 'ফ্রি ফুড' নামে একটি অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের আওতায় অল্প বয়স্ক মুসলিম বাচ্চাদের তাদের অজান্তেই পরিবেশন করা হয়েছিল শূয়োরের মাংস। এর লক্ষ্য ছিল বাচ্চারা অল্প বয়স থেকেই হালাল মাংস খেতে আসক্ত হয়ে পড়ে।
তুর্কি বংশোদ্ভূত উইঘুর মানবাধিকার কর্মী আরসলান হিদায়াত বলেছেন, শুয়োরের মাংস খাওয়া থেকে শুরু করে মদ্য পান করা পর্যন্ত, চীন সরকার ইসলামে হারাম বলে বিবেচিত সব কিছুকেই স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। চীন সরকার নিশ্চিত করতে চায় যে মুসলমানরা শুকরের মাংস খায় এবং রমজানে রোজা না রাখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.