কামবাসনাকে উত্তেজিত করে তােলা আহার - বিহার , দৃশ্য - শ্ৰব্য এবং শৃঙ্গার পরিত্যাগ করে, সর্বদা বীর্য রক্ষা করে উদ্ধরেতা হওয়াকেই ব্রহ্মচর্য বলে।
অষ্টবিধ মৈথুন বাসনার দৃষ্টিতে কারাে দর্শন, স্পর্শন, একান্তসেবন, ভাষণ, বিষয় কথা, পরস্পর ক্রীড়া, বিষয়ের ধ্যান এবং সঙ্গ (sex) - এই হচ্ছে আট প্রকারের মৈথুন। ব্রহ্মচারীকে এই সব থেকে নিজেকে দূরে রেখে সর্বদা জিতেন্দ্রিয় হয়ে নিজের সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলােকে চোখ, কান, নাক, ত্বক এবং রসনাকে সদা শুভের দিকে প্রেরিত করা উচিত এবং মনে সর্বদা ভদ্র, সুবিচার, শিবসংকল্প রাখা উচিত।
সাধককে সর্বদাই নিজের মনে এই বিচারকে দৃঢ় করে রাখা উচিত যে, আমার স্বাভাবিক অবস্থা যেন বিকার রহিত থাকে। যেমন জলের স্বাভাবিক গুণ হছে শীতলতা এবং বয়ে চলা জমা, গরম হওয়া, বাষ্প হওয়া এবং বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়া- এই সব গুণ জলের স্বাভাবিক গুণ নয় এবং গরম করলে, বাষ্প হলে এবং বরফ হয়ে নিরেট হয়ে ওঠার পরেও জল আবার নিজের স্বাভাবিক অবস্থাতে ফিরে আসে ... ঠিক এই প্রকার ব্রহ্মচর্য হছে আমাদের স্বাভাবিক অবস্থা।
কখনাে শান্ত, একান্ত স্থানে বসে চিন্তন করা এবং নিজের ভেতরে উকি মেরে দেখা যে, কোথাও কোন বাসনা আছে কিনা? আপনার মধ্যে কি কাম, ক্রোধ, লােভ, মােহ এবং অহংকার ইত্যাদি বিকার আছে? তাহলেই আপনি দেখতে পাবেন যে, আপনার ভেতরে এই সব বিকার একেবারেই নেই।
এই সব বিকারকে আমন্ত্রিত করে সৃষ্টি করা হয়। এই সব বিকার চোরের মত আমাদের শরীরে আসে এবং খুব অল্প সময়ের জন্য আমাদের শরীরে বসবাস করে এবং সেই অল্প সময়ের ভেতরেই আমাদের শরীর, মন এবং আত্মার সমস্ত শক্তিকে লুটে নিয়ে, বিকৃত করে দিয়ে, সব কিছু নষ্ট করে দিয়ে পালিয়ে যায়।
কাম এবং ক্রোধ অল্প সময়ের জন্য আসে এবং সেই অল্প সময়ের মধ্যেই এই বিকার আমাদের শরীরকে শক্তিহীন, তেজহীন এবং কান্তিহীন করে দেয়, সমস্ত শরীরের মধ্যে বিষ গুলে দেয়।
আমরা বার বার লুট হয়ে যেতে থাকি আর বলতে থাকি যে, এদের হাতে লুট হওয়াটা স্বাভাবিক। এর থেকে আমরা নিজেদেরকে বাঁচাতে পারি না। তাহলে ভাই, আপনাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। উকুন, জাগুন আর নিজের যােণ সাধনা এমএম স্বাভাবিক ধর্ম ( স্বধর্ম ) -কে চিনুন। বিকার আপনার স্বধর্ম নয়, এটা হয় ২৪ পরধর্ম আর গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন –
“ ঘর্ট নিঘন স্বয় ; অমর্মী গৰ : ' ' ।
কাম , ক্রোধ , লােভ , মােহ এবং অহংকার ইত্যাদি বিকারের আগুনে নিজেকে জ্বালাবেন না । আপনি আত্মা, আপনার স্বাভাবিক গুণ হছে মৈত্রী, করুণা, প্রেম, সহানুভূতি, সেবা, সমর্পণ, পরােপকার, আনন্দ এবং শান্তি।
আপনি নির্বিকার, বিকারকে তাে আমরা নিজেরাই ডেকে আনি, এমনভাবে আমন্ত্রণ জানাই, যেন কোন ব্যক্তি সারাটা জীবন ধরে ধন - সম্পত্তি আর বৈভব সঞ্চয় করে আর তারপর চোরেদের আমন্ত্রণ জানায় এবং যখন চোর তার বাড়ি, জমি কজা করে বসে যায়, সব সম্পত্তি লুটে নেয়, তখন সে দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে অসহায়ের মত দেখতে থাকে আর বলতে থাকে যে, হায় ! এসব কি হল ! আমি একে ডেকে এনে কি ভুলই না করেছি ... এতাে আমার সব কিছু লুটে নিল ... আমার সব কিছু বর্বাদ করে দিল।
কিন্তু মানুষ বাইরের সম্পত্তি লােটাবার জন্য তাে চোরেদের আমন্ত্রণ জানায় না, কারণ এই সম্পত্তি আর বৈভব ও নিজে একত্রিত করে, সেটা লুট হয়ে যাওয়াটা ও নিজের চোখে দেখতে পারে।
Read more: 'গারসি' বা 'গাস্বী' ব্রত কী? কখন এই ব্রত পালন করা হয়?
কিন্তু মানুষ একটু ভাবনা - চিন্তা করে না , ওর ভেতরে অসীম আনন্দ , শান্তি , অপার সুখ , শক্তি , কান্তি , তেজ , বুদ্ধি , পরাক্রম, মৈত্রী, করুণা , মুদিতা ইত্যাদি অনন্ত ঐশ্বর্য, যা প্রভু ওকে প্রদান করেছেন, সেটাকে কাম , ক্রোদ ইত্যাদি বিকার আর বাসনারূপী চোরেদের বারবার আমন্ত্রণ জানিয়ে বারবার কেন লুটিয়ে দেয় আর বলে যে , এটাই স্বাভাবিক ... এতে আমার করার কি আছে ? আরে , এবার তাে নিজেকে সামলে নিন আর নিজেকে চিনুন , ভগবানের দেওয়া শক্তিকে চিনুন।
এই সুবিচার শিব - সংকল্পকে নিজের ভেতরে দৃঢ় করে নিন যে , নিজেকে নির্বিকার , ব্রহ্মচারী , স্বধর্মী রাখাটা স্বাভাবিক এবং এটা নিশ্চিত রূপে জানবেন যে , বিকারের অস্বাভাবিক এবং অল্পকালীন প্রবাহের পরে আমাকে জীবন নির্বিকার অবস্থাতেই কাটাতে হবে।
সুতরাং, এবার আর নিজেকে বিকারের আগুনে আর পােড়াবেন না । ভগবানের দেওয়া দিব্যশক্তিগুলাে দ্বারা সম্পন্ন হয়ে ব্রহ্মচর্যের পালন করে অসীম শান্তি এবং অপরিমিত আনন্দ আর অপার সুখকে নিজের ভেতরে প্রাপ্ত করুন।
ব্রহ্মচর্য পালন করে ওজস্বী , তেজস্বী , বুদ্ধিমান , শক্তিমান এবং পরাক্রমী হয়ে উঠে সবার সঙ্গে দিব্য প্রেম করে সেবা , পরােপকার এবং করুণা ইত্যাদি দ্বারা নিজের জীবনকে সুন্দর করে তুলুন । যােগ সাধনার পথে চলুন , একমাত্র তাহলেই নিজেকে এবং নিজের ভেতরে বিরাজমান সচিদানন্দ স্বরূপ প্রভুকে জানতে এবং চিনতে পারবেন। এটাই হছে জীবনের সত্য। এটাই হচে জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ।
কিন্তু মানুষ একটু ভাবনা - চিন্তা করে না , ওর ভেতরে অসীম আনন্দ , শান্তি , অপার সুখ , শক্তি , কান্তি , তেজ , বুদ্ধি , পরাক্রম, মৈত্রী, করুণা , মুদিতা ইত্যাদি অনন্ত ঐশ্বর্য, যা প্রভু ওকে প্রদান করেছেন, সেটাকে কাম , ক্রোদ ইত্যাদি বিকার আর বাসনারূপী চোরেদের বারবার আমন্ত্রণ জানিয়ে বারবার কেন লুটিয়ে দেয় আর বলে যে , এটাই স্বাভাবিক ... এতে আমার করার কি আছে ? আরে , এবার তাে নিজেকে সামলে নিন আর নিজেকে চিনুন , ভগবানের দেওয়া শক্তিকে চিনুন।
এই সুবিচার শিব - সংকল্পকে নিজের ভেতরে দৃঢ় করে নিন যে , নিজেকে নির্বিকার , ব্রহ্মচারী , স্বধর্মী রাখাটা স্বাভাবিক এবং এটা নিশ্চিত রূপে জানবেন যে , বিকারের অস্বাভাবিক এবং অল্পকালীন প্রবাহের পরে আমাকে জীবন নির্বিকার অবস্থাতেই কাটাতে হবে।
সুতরাং, এবার আর নিজেকে বিকারের আগুনে আর পােড়াবেন না । ভগবানের দেওয়া দিব্যশক্তিগুলাে দ্বারা সম্পন্ন হয়ে ব্রহ্মচর্যের পালন করে অসীম শান্তি এবং অপরিমিত আনন্দ আর অপার সুখকে নিজের ভেতরে প্রাপ্ত করুন।
ব্রহ্মচর্য পালন করে ওজস্বী , তেজস্বী , বুদ্ধিমান , শক্তিমান এবং পরাক্রমী হয়ে উঠে সবার সঙ্গে দিব্য প্রেম করে সেবা , পরােপকার এবং করুণা ইত্যাদি দ্বারা নিজের জীবনকে সুন্দর করে তুলুন । যােগ সাধনার পথে চলুন , একমাত্র তাহলেই নিজেকে এবং নিজের ভেতরে বিরাজমান সচিদানন্দ স্বরূপ প্রভুকে জানতে এবং চিনতে পারবেন। এটাই হছে জীবনের সত্য। এটাই হচে জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.