টেট পাশ না করেও প্রাথমিকে শিক্ষক পদে নিয়ােগের ঘটনা সামনে এসেছে। আর এতে বড়সড় গােলমাল আঁচ করে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ২০১৬-র পুরাে নিয়ােগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে জনস্বার্থ মামলা শুরুর সুপারিশ করলাে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।
ইতিমধ্যে সিঙ্গল বেঞ্চে একটি মামলার সূত্র সামনে এসেছে। উত্তর দিনাজপুরেই কমপক্ষে ১৩ জনের নাম জানা গেছে, যাঁরা কেউ টেট উত্তীর্ণ না হয়েও ২০১৬ সাল থেকে প্রাথমিকে শিক্ষকতা করে আসছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, যে তথ্য সামনে এসেছে, নিয়ােগে স্বচ্ছতার জন্যই তা খতিয়ে দেখা জরুরি। তাই এটি জনস্বার্থ মামলা হিসেবে বিচারযােগ্য।
উত্তর দিনাজপুরের স্বদেশ দাস নামে এক যুবক ২০১৬ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন, পরে তা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নজরে আসে, ওই প্রার্থীর টেট
পাশের কোনও নথি জমা পড়েনি। এরপর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তাঁকে নথি চেয়ে পাঠায় কিন্তু তিনি কোনও নথি দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন সংসদকে।
ফলস্বরূপ তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সেই নির্দেশ-কে চ্যালেঞ্জ করে ওই যুবক হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁর আইনজীবী হবিবুর রহমানের দাবি, সংসদের ভুলেই তাঁর মক্কেলের চাকরি খোয়াতে হয়েছে।
যদিও হাইকোর্ট নথি দেখে নিশ্চিত হয়,টেট সংক্রান্ত নথি দিতে না-পারাতেই স্বদেশকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রয়ােজনীয় নথি না দেখেই কী করে সংসদ তাঁকে নিয়ােগ করেছিলাে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্ট শিক্ষা সংসদকে ভৎসনাও করে।
চাকরি ফেরত পাওয়ার কোন আশা নেই বুঝে মামলা-কারী যুবক এর পর আদালতে বিস্ফোরক অভিযােগ আনেন। তিনি ১২ জনের তালিকা দিয়ে জানান, টেট উত্তীর্ণ না হয়ে দিনাজপুরেই এঁরা চাকরি করছেন।
এই অভিযােগের ভিত্তিতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে ব্যক্তি বিশেষের মামলা জনস্বার্থ মামলায় রূপান্তর করে বিস্তারিত বিচারে উচ্চ বেঞ্চে পাঠানাের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ২২ লক্ষ চাকরি-প্রার্থী টেট পরীক্ষা দেন। এদের মধ্যে ২০১৬ সালে ৪২ হাজার জনকে শিক্ষক পদে নিয়ােগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। শিক্ষক নিয়ােগে অস্বচ্ছতার অভিযােগে হাইকোর্টে বেশ কিছু মামলা তখন থেকেই চলছে, কিন্তু উত্তর দিনাজপুরের যুবকটির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বেজায় বেকায়দায় পড়েছেন শিক্ষা সংসদের কর্তারাও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.