বিষপানে প্রতিবাদ কাণ্ডে পাঁচ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টার ধারায় মামলা দায়ের করল পুলিশ।
মঙ্গলবার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের পাঁচ শিক্ষিকা বিষপান করে বদলির প্রতিবাদে সল্টলেকে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। এনআরএস বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে এখন তাদের চিকিৎসা চলছে। এনআরএস-এ অসুস্থ দুই শিক্ষিকার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে যান কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ সরকার (Subhas Sarkar)।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “বাম আমলের তুলনায় এসএসকে (SSK) এমএসকে (MSK) সহায়ক-সহায়িকাদের কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযােগ-সুবিধা বাড়ানাে হয়েছে। তারপরও যাঁরা আন্দোলন করছেন, তারা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন, তাঁরা বিজেপি ক্যাডার।” ঘটনার পরই দফতরের কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী সােশ্যাল মিডিয়ায় একটি পােস্টে লেখেন, “বাম সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এবং গ্রামােন্নয়ন বিভাগের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকে-র সহায়ক-সহায়িকা, সম্প্রসারক-সম্প্রসারিকারা নামমাত্র সাম্মানিক-এর বিনিময়ে কাজ করতেন। কাজের নিশ্চয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসরকালীন সুযােগ-সুবিধা বলে কিছু ছিল না। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ১ ডিসেম্বর, ২০২০ থেকে এসএসকে এবং এমএসকেগুলিকে বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে এনে একটি সুসংবদ্ধ রূপ দেয়।”
Caution: Disturbing Visuals
— Anindya (@AninBanerjee) August 25, 2021
Teachers in #WestBengal consumed poison to protest their transfer. One of them in this video claims, "We get Rs 10K/month. How can we survive after a transfer?" pic.twitter.com/drbXnwDrID
এদিন এনআরএস (NRS)-এ ফের ‘পয়জন ইনফরমেশন সেন্টার' এর সদস্যরা যান। তাঁরা জানিয়েছেন, শিক্ষিকা- দের রক্তে কীটনাশক পাওয়া গিয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। বৃহস্পতিবার দু’জনকে জেনারেল বেডে দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বলেন, “আমি নিজে চিকিৎসক। সিসিইউ (CCU)-তে যাওয়ার পদ্ধতি আমি ভাল করে জানি। তা সত্ত্বেও আমাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে।"
সহায়ক-সহায়িকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে মাসিক ১০ হাজার ৩৪০ টাকা এবং সম্প্রসারক সম্প্রসারিকাদের সাম্মানিক বাড়িয়ে ১৩ হাজার ৩৯০ টাকা করা হয়েছে জানিয়ে সােশ্যাল নেটওয়ার্কে ব্রাত্য লেখেন, সবার বাৎসরিক ৩ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট চালু করা হয়েছে। প্রত্যেককে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে।
যাঁরা ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তাঁদের অবসরের সময়ে প্রত্যেকের জন্য ৩ লাখ টাকা এক -কালীন অবসর-ভাতা চালু করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও এই সুবিধা দানের বিষয়ে অর্থ দফতরের সঙ্গে ফাইল চলছে।
৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত যাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের জন্য চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রোভিডেন্ট ফান্ড (Provident fund) চালু করা হয়েছে। মহিলাদের জন্য সরকারি নিয়মানুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেকের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সহ বাৎসরিক ১৮ দিন ক্যাজুয়াল লিভ বা ছুটির অধিকার দেওয়া হয়েছে।
শেষ লাইনে শিক্ষামন্ত্রী লিখেছেন, তারপরেও যারা আন্দোলন করছেন, তারা শিক্ষক-শিক্ষিকা নন,বিজেপি ক্যাডার। বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিজেপি (BJP) এবং কংগ্রেস।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘােষ (Dilip Ghosh) বলেন, “যারা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সেই শিক্ষিকা- দের বিজেপি ক্যাডার বলে রাজনীতির রং দেখাটা ঠিক নয়। ওই শিক্ষিকারা আমাদের দলের কেউ নন।শিক্ষকদের যদি এই দুর্গতি হয় তাহলে শিক্ষা বিভাগের অন্তর্জলি যাত্রা হয়ে গিয়েছে।”
লােকসভায় বিরােধী দল কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরি
বলেন, “বিকাশ ভবনের সামনে শিক্ষিকাদের আত্মহত্যার চেষ্টা সারা বাংলাকে লজ্জিত ও কলঙ্কিত করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.