মালদা: আদিবাসী বৃদ্ধা মহিলার গলা টিপে, মারধর করে জোর করে টিপসই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনার টাকা তুলে নেওয়ার অভিযােগ উঠলো যুব তৃণমূলে ৩ জন নেতার বিরদ্ধে।
এ নিয়ে আক্রান্ত আদিবাসী ওই বৃদ্ধার পরিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় স্থানীয় তিন যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযােগ দায়ের করেছে। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় হরিশ্চন্দ্রপুরের ওই তিন তৃণমূলের যুব নেতার বিরুদ্ধে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে দলের জেলা নেতৃত্ব।
ঘটনাটি ঘটেছে, হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাইশা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,এই গ্রামের বাসিন্দা সাবিত্রী ওঁরাও (৭৫) পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনার প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা।
আধার লিঙ্ক যুক্ত তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতেই তাঁর কাছে হাজির হয় এলাকার তিন তৃণমূল নেতা রফিক আলম, নারায়ণ কর্মকার এবং সােনু ভাস্কর।
অভিযােগ, তাঁরা হুমকি দিয়ে জানায় যে তাঁদের বদন্যতায় এই টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। তাই প্রতি কিস্তিতে তাঁদের ভাগ দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বৃদ্ধা প্রতিবাদ করলে তাঁরা হুমকি দিয়ে চলে যায়। দু’দিন পরে আবার তাঁকে ঘরে একলা পেয়ে এক রকম জোর করেই রফিক আলমের বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে গলা চেপে ধরে। তিন জনে মিলে মারধর করে তাঁর টিপ সই নিয়ে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ১২ হাজার টাকা তুলে নেয় বলে অভিযােগ।
ওই বৃদ্ধা আহত অবস্থায় কোনও-ক্রমে বাড়ি ফিরলে তাঁর ছেলে তাঁর চিকিৎসা করায়। তবে এখনাে অসুস্থ বৃদ্ধা। গ্রাম ছাড়া করানাের হুমকিও দিয়েছে অভিযুক্ত তৃণমূল যুব নেতারা বলে অভিযােগ পরিবারের। পাশাপাশি এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধার পরিবার।
আক্রান্ত বৃদ্ধা মঙ্গলবার পুরাে বিষয়টি নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর
থানায় ওই তিন যুব তৃণমূল নেতার বিরদ্ধে অভিযােগ দায়ের করেছেন। এই ঘটনাটি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এ নিয়ে বিজেপি (BJP) তীব্র সমালােচনা করেছে তৃণমূলের।
যদিও জেলা তৃণমূলও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। এই তিন যুব
নেতার বিরুদ্ধে দলগত ভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ যাতে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেও নজর দিচ্ছে। তবে ঐ তিন অভিযুক্ত যুব নেতার একজন সােনু ভাস্কর এই অভিযােগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া
জানিয়েছেন, তৃণমূল (TMC)এভাবে সন্ত্রাস দেখিয়ে গরিব মানুষের টাকা, জায়গা হরফ করার চেষ্টা করছে। সব কিছুতেই ওরা কাটমানি খাচ্ছে। প্রতিবাদ করলে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এদিনের এই ঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।যদিও যাদের বিরদ্ধে এই অভিযােগ ওই তিন তৃণমূল যুব নেতার এখনো কোন কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান জানিয়েছেন, এই ঘটনার সত্যতা কতটা আছে তা বলতে পারব না। তবে যদি সত্যি এরকমটা ঘটে থাকে তাহলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু বিজেপি যে বড় বড় কথা বলছে সেটা তাদের মানায় না। এই ধরনের অত্যাচার বিজেপিরাই বেশি করে থাকে।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার IC সঞ্জয় কুমার দাস জানিয়েছেন আমরা অভিযােগ পেয়েছি, পুরাে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.