শিশু বিক্রির অভিযােগ সরকার অনুমােদিত হােমের বিরুদ্ধে WBCS অফিসারসহ গ্রেফতার দশ জন।
সরকার অনুমােদিত হাওড়ার একটি হােমে থেকে শিশু বিক্রি ও তাদের উপরে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর অভিযােগ উঠল।
স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী হাওড়া পুর নিগমের তৃণমূল পরিচালিত বাের্ডের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর পুত্রবধূ সালকিয়ার শ্রীরাম ঢ্যাং রােডে গত পাঁচ বছর ধরে একটি সরকার অনুমােদিত হােম চালান হতো ওই হােমে। বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশুদের এনে রাখা হত।
জানা গিয়েছে, করুণা পশ্চিমবঙ্গ উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার সােসাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে ওই হােমটি পরিচালনা করতেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের পুত্রবধূ গীতশ্রী অধিকারী। ওই হােমে ক্রেডেল বেবি রিসেপশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছিল যার মাধ্যমে শিশু দত্তক দেওয়াও হত।
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে এক মহিলা খােদ নবান্নে গিয়ে অভিযােগ করে আসেন যে এই হােমের শিশুদের ওপর শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। এই অভিযােগ পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
গতকাল হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারের নির্দেশে মহিলা থানা ওই হােমে তল্লাশি চালায়। এরপরই ওই হােমের মালকিনসহ আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করে হাওড়া সিটি পুলিশ।শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করার পর হােমে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
গােটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মহিলা থানার পুলিশ। প্রাক্তন পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর বাড়িতে গেলে দেখা যায় তার বাড়ি তালা বন্ধ রয়েছে। বাড়িতে কেউ নেই, ফোনেও তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে অস্বীকার করেন।
হােমের কার্যকলাপের বিবরণ দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মনিলাল বেতাল বলেন, বিগত ৪-৫ বছর ধরে এই হােম চালু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ছােট বাচ্চাদের এখানে আনা হয়। এখান থেকে অনেকে যাদের সন্তান হয়নি,তারা বাচ্চা কিনে নিয়ে যায়। কারাের কাছে ৪ লাখ,কারও থেকে তিন লাখ। এরকম বিভিন্ন দামে বাচ্চা বিক্রি করা হয় এই হােম থেকে।
এই প্রসঙ্গে উত্তর হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রাই জানান, এটা কোনও নতুন ঘটনা নয়। গােটা রাজ্যজুড়েই নারী ও শিশু পাচার চক্র চলে ক্ষমতাসীন দলের সদস্য-দের যােগাযােগকে সঙ্গে নিয়ে। যেহেতু এই বিষয়টি অনেক উঁচুস্তরে পৌঁছে গিয়েছিল, তাই হাওড়া সিটি পুলিশ একপ্রকার বাধ্য হয়েই তদন্ত শুরু করে। তদন্ত শুরু হতেই বেরিয়ে এলাে হাওড়ার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের পুত্রবধূ কীভাবে তার শাশুড়ির ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে।
তিনি বলেন, কয়েক দিন আগেই হাওড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অনেক কথা বললেন। ভােটের মুখে তার দলেরই তৃণমূল নেত্রীর পুত্রবধূ এই ধরণের নোংরা কাজের সঙ্গে যুক্ত পাওয়া গেল।
তিনি দাবি করে বলেন, যেখানে কোনও রকম দু'নম্বরী কাজ হবে সেখানেই তৃণমূল কংগ্রেসের লােকেদের দেখতে পাওয়া যাবে। তাই তারা চান এই মামলার উচ্চ-পর্যায়ে তদন্ত হােক। এতে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.