বসিরহাট : ১৩৪ জন উপভোক্তা মহিলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকলো তৃণমূল উপপ্রধানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে।
হতাশ স্বপ্না সেন |
দায় এড়াতে প্রযুক্তিগত ক্রটি হয়েছে বলে মেনে নিলেন স্বয়ং বিভিও (BDO) নিজেই স্বীকার করে নিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir bhandar) প্রকল্পে এমন ১৩৪ টি ভুল ধরা পড়েছে।
প্রযুক্তিগত ক্রটির জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা প্রকৃত উপভােক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না ঢুকে অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাচ্ছে। অথচ এই আসবে এই আসবে করে অপেক্ষায় কয়েকশাে উপভোক্তা দিন গুনছে।
ঘটনাটি হল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাদুড়িয়া ব্লকের জগন্নাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলড়াঙা গ্রামের ১৫৮ নম্বর বুথের। তিলড়াঙা গ্রামের বাসিন্দা স্বপ্না সেন, সাবিনা বিবি, কদবানু বিবিদের অভিযােগ অধিকাংশের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকতেও দরখাস্ত করার পরেও হাতে পাননি লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মাসিক ৫০০-১০০০টাকা।
তবে এদের মধ্যে স্বপ্না সেন এর ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা তার অ্যাকাউন্টে না ঢুকে সরাসরি চলে গিয়েছে জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান হাসানুজ্জামানের স্ত্রী ইরিনা ইয়াসমিনের অ্যাকাউন্টে।
যদিও উপপ্রধান বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, তারই দল তৃণমূল কংগ্রেসের একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেছে তার বদনাম করতেই।
BDO সুপর্ণা বিশ্বাস ইতিমধ্যেই তৃনমূল উপপ্রধানের স্ত্রী ইরিনা ইয়াসমিনকে বলে দিয়েছেন গত তিন মাসের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের প্রকৃত উপভোক্তা স্বপ্না সেনকে ১৫০০ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে প্রযুক্তিগত ত্রুটি সংশােধন করে স্বপ্না সেনসহ বাকি উপভােক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, এমনই অনেক উপভােক্তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাদুড়িয়া ব্লক জুড়ে।সাফাই দিতে BDO অফিসের এক কর্মী বলেই দিলেন রাজ্য জুড়েই রয়েছে এমন অনেক ঘটনা। তাহলে হচ্ছেটা কী? তাহলে এখানেও কী সেই আমফান দুর্নীতির গল্প?
মঙ্গলবার পিলভাঙা গ্রামে স্বপ্না সেনের বাড়িতে গিয়ে জানা গেল প্রকল্পের আড়ালে আরেক অমানবির কাহিনি। স্বপ্না সেন গত ১৬ আগস্ট দরখাস্ত করেছিলেন দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে। বাদুড়িয়া এলএমএস গার্লস স্কুলে বসেছিল এই শিবির।দরখাস্ত জমা দেওয়ার একদিনের মধ্যেই মােটামুটি সবার এসএমএস (SMS) এসেছিল।
স্বপ্না সেন জানান, তার যে মােকাইল নাম্বার দেওয়া ছিল তাতে কোন SMS আসেনি। প্রায় সবার যখন টাকা ঢোকা শুরু হয় তিনিও ব্যাঙ্কে যান। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানেন, তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি।
বাদুড়িয়া বিডিও অফিস থেকে বলা হয় অন্য ব্যক্তির মােবাইল নাম্বার এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নাম্বার দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে। টাকা ঢুকেছে সেই অ্যাকাউন্ট। ব্যাঙ্ক থেকে জানতে পারে অ্যাকাউন্ট হােল্ডার আর কেউ নন, তার গ্রামের ১৫৯ নং বুথের স্বয়ং ইরিনা ইয়াসমিন, যিনি উপপ্রধান হাসানুজ্জামানের স্ত্রী।
স্বপ্না সেনের দাবী এর জন্য কারা দায়ী? তদন্ত করে তাদের শাস্তি দেওয়া হােক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.