মালদা : হাতে বন্দুক, দিনে-দুপুরে গ্রামের মধ্যে গুলি চালাচ্ছে তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল (TMC)-র গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দেওর। পাশ থেকে উৎসাহ যােগাচ্ছে অনেকে। এমনকি শিখিয়ে দিচ্ছে কেমন করে চালাতে হয় বন্দুক।
এমনই এক ভিডিও সােশ্যাল-মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শােরগােল পড়ে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে। অবশ্য অভিযুক্ত ওই যুবককে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। গােটা ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোস্যাল মিডিয়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক মালদার চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের মালিওর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তােরিনা খাতুনের দেওর।
ভিডিও ভাইরাল হতেই প্রধানের দেওর অভিযুক্ত আরজাউল হক-কে আটক করেছে পুলিশ। আরজাউল দলের একজন সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত। কয়েক দিন আগেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাতলামারি এলাকায় বাসির শেখ ও উনসাহাক গােষ্ঠীর লড়াইয়ে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়।
দুই গােষ্ঠীই তৃণমূলের আশ্রিত বলে জানা গেছে। ওই দুই গােষ্ঠী গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযােগ।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মালিওর-২-এ সিপিএম ও কংগ্রেস বাের্ড গঠন করে। এরপর প্রধান ও বাকি সদস্যরা শাসক দলে নাম লেখান। এমনকি প্রধানের বিরুদ্ধেই দলের একাংশ অনাস্থা পেশ করে,কিন্তু প্রধান আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্থগিতাদেশ পেয়েছেন। তা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে যথেষ্ট। এমতাবস্থায় প্রধানের দেওরের বন্দুক থেকে গুলি ছােড়ার ভিডিও ভাইরাল হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে এলাকা জুড়ে।
কাতলামারী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বাসীর ও মহম্মদ উনসাহাক দীর্ঘদিন ধরে এরা দু’জন একে অপরের প্রতিপক্ষ। এরই সুবাদে গ্রামবাসীর এবং উনসাহাকের নামে নামকরণ হয় দুটি গােষ্ঠীর। এমনকী সেখানকার বসবাসকারী স্থানীয় মানুষেরাও এই দুই গােষ্ঠীতে বিভক্ত। যার ফলে ওই দুই গােষ্ঠীর মধ্যে হামেশায় চলতে থাকতাে প্রাণঘাতি সংঘর্ষ।
যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র শুভময় বসু জানিয়েছেন, ঘটনা কি ঘটেছে তা না জেনে বলতে পারব না। তবে যদি কেউ আইন নিজের হাতে তােলার চেষ্টা করে তার জন্য পুলিশ ও প্রশাসন রয়েছে।
বিজেপি (BJP)-র জেলা সভাপতি গােবিন্দ চন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, এটা তৃণমূলের কালচার। এর বাইরে আর কি বলার আছে। এরকমভাবে সন্ত্রাস ছড়ানাের চেষ্টা বরাবরই শাসক দলের একাংশের নেতাকর্মীরা করে আসছে। পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি (I.C) সঞ্জয়কুমার দাস জানিয়েছেন আমরা ওই যুবককে গ্রেফতার করেছি। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.