রাজ্য বিধানসভায় মমতা ব্যানার্জি সরকার মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর, ২০২১) একটি প্রস্তাব পাস করেছে। এই প্রস্তাবটি মোদী সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, যেখানে কেন্দ্র সরকার বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (BSF) এক্তিয়ার বাড়ানো-র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার BSF অধিনিয়মে সংশোধন করেছে। এই পরিবর্তনের উদ্দেশ্য হল নিরাপত্তা বাহিনীকে পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে তল্লাশি এবং গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া।
মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের আগে, BSF এর জন্য এই রেঞ্জ ৫০ কিলোমিটারের থেকে অনেক কম প্রায় ১৫ কিলোমিটার ছিল।
West Bengal Legislative Assembly passes a resolution against the Centre’s move to extend BSF’s jurisdiction to 50km from the international border in the state
— ANI (@ANI) November 16, 2021
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করার সময় তুমুল হাঙ্গামা হয়। এরপর তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ (Udayan Guha) একটি বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন, তিনি বলেন, “তল্লাশির নামে ৮ থেকে ১০ বছরের ছেলের সামনে যখন বাবাকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়, মায়ের গোপন অঙ্গে হাত দেওয়া হয়। তখন সেই ছেলে দেশপ্রেমিক হতে পারে না। ওর কানের কাছে যতই ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলা হোক, সে কিন্তু দেশপ্রেমিক হবে না।”
এছাড়াও TMC নেতারা BSF জওয়ানদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত মামলার বিষয়টিও উত্থাপন করেছেন এবং দাবি করেছেন যে তাদের বিরুদ্ধে অনেকগুলি মার্ডারের মামলা রয়েছে।
#NewsAlert | 'BSF jawans exploit women ... 240 cases have been registered against BSF jawans', TMC leaders allege on the floor of the house in #WestBengal assembly.
— TIMES NOW (@TimesNow) November 16, 2021
Tamal Saha with details. pic.twitter.com/Bt9P7Iiu4S
টিএসসি বিধায়ক উদয়ন গুহর জবাবের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে BSF- এর তরফ থেকেও। বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF) এর এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থা ANI-কে জানিয়েছেন, ”BSF একটা পেশাগত সংস্থা। আমরা আমাদের যা দায়িত্ব দেওয়া হয়, তা নিয়ম মেনেই পালন করি। BSF এর মহিলা প্রহরীরা মহিলাদের তল্লাশি করেন। মহিলাদের খারাপ-ভাবে স্পর্শ করার অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন।
পশ্চিমবঙ্গের আগে পাঞ্জাব বিধানসভাতেও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছিল। সেখানে কেন্দ্রের আদেশের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাস করে তা নাকচ করে করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি (Charanjit Singh Channi) এটাকে দুর্ভাগ্য-জনক বলেছেন। তিনি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে রাজ্যের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বলেছেন।
অন্যদিকে, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং BSF-এর এক্তিয়ার বাড়ানোকে সমর্থন করেছিলেন।
এছাড়াও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন এবং এটিকে দেশের গণতন্ত্রিক কাঠামোর ওপর হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ করেছিলেন। এছাড়া মমতা ব্যানার্জি ছাড়াও, রাজ্য সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জিও বলেছিলেন যে BSF-এর এক্তিয়ার বাড়ানোর পদক্ষেপ দেশের গণতন্ত্রিক কাঠামোর ওপর সরাসরি আক্রমণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.