গ্রুপ ডি-র পর এবার গ্রুপ সি। রাজ্যে আরও এক নিয়ােগ দুর্নীতির অভিযােগ প্রকাশ্যে এলো।
কিছুদিন আগেই গ্রুপ ডি নিয়ােগের মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) ওপর ক্ষুব্ধ হন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। এবার গ্রুপ সি (Group C)মামলাতেও বড় ধাক্কা খেল কমিশন। ভুয়াে নিয়ােগের অভিযােগে ৩৫০ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কত জনের ভুয়াে নিয়ােগ হয়েছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
মামলাকারীর অভিযােগ ছিল, ২০১৯-এর ১৮ মে Group C পদে নিয়ােগের জন্য নির্ধারিত প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও 'অন্তত ৪০০ কর্মীকে নিয়ােগ করা হয়েছে, এমন অভিযােগের প্রেক্ষিতে প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর নিয়ােগপ্রাপ্ত প্রার্থীদের নথি তলব করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে ছিল সেই মামলার শুনানি ছিল। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৩৫০ জন চাকরি পেয়েছেন, এমন অভিযােগ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারীরা। আগেই এই মামলায় এক জনের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এবার বাকিদেরও বেতন বন্ধ করার কথা বলল কলকাতা হাইকোর্ট।
মামলাকারীদের দাবি ছিল প্যানেল বহির্ভূত ভাবে চাকরি পেয়েছেন অন্তত ৩৫০ জন। এদের মধ্যে যাঁরা চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন তাঁদের সবার বেতন বন্ধ করতে কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বলা হয়েছে, তারা খতিয়ে দেখবে যে, প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও নিয়ােগপত্র দেওয়া হল কিভাবে। কমিশন দেখে চার দিনের মধ্যে ডি আই (D.I) কে বেতন বন্ধ করে দিতে বলবে।
এ ছাড়াও সমস্ত নথি সিল করে রাখার পাশাপাশি এসএসসি কর্তৃপক্ষকেও এ নিয়ে একটি রিপাের্ট দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
এ দিকে এই মামলায় আবারও একবার প্রকাশ্যে এসেছে রাজ্য সরকারের দুই দপ্তরের দ্বন্দ্ব। গ্রুপ ডি- (Group-D)-র ক্ষেত্রেও একই ছবি দেখা গিয়েছিল। মামলায় যাদের বেতন বন্ধ হচ্ছে, তাদের মামলায় যুক্ত করার আবেদন জানিয়েছিল কমিশন। সেই আবেদন শুনে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, মামলাকারী অর্থাৎ যাঁরা চাকরিই পাননি তাঁরা অত্যন্ত গরিব।
বিচারপতি বলেন, ‘বাের্ডের অনেক টাকা মামলায় যুক্ত করতে চাইলে তারাই করুন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় Group-C পদে ভুয়াে নিয়ােগ হয়েছে বলে অভিযােগ উঠেছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মামলাকারীর এক দায়ের করা মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। ৩৫০ জন ইতিমধ্যে নিয়ােগপত্র বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার (Appointment Letter) পেয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমজার (Jay Prakash Majumdar) এই প্রসঙ্গে বলেন, SSC যে ভাবে চলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে দুর্নীতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে। তাঁর দাবি, মন্ত্রীদের আত্মীয় স্বজনেরা চাকরি পেয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, "এ ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে বলে বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। যেখানে মামলা হয়নি, এমন কত নিয়ােগে দুর্নীতি হচ্ছে, সেই প্রশ্নই উঠছে।"
২০১২-র পর থেকে সব নিয়ােগ ঘিরেই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, “এই রাজ্যের সরকারের চরম অপদার্থতা সামনে আসছে। সার্বিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। প্রয়ােজনে CBI তদন্ত হােক।
এর আগে গ্রুপ ডি-তেও ভুয়াে নিয়ােগের অভিযােগ প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও নিয়ােগ করার অভিযােগ ওঠে। সে ক্ষেত্রেও ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.