ছোট জায়গা, কিন্তু সেখানেই মনের মত সমস্ত জিনিস সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখাটাই আর্ট। এই ব্যাপারে যে যত নিপুণ সে-ই হয় তত গোছানাে। এই কঠিন কাজটিতে অল্পবিস্তর জ্ঞান সকলের থাকলে সঠিক দক্ষতা অর্জনের জন্য দরকার পড়াশোনা বা ইন্টিরিয়ার ডিজাইনিং কোর্স (Interior Designing course) করা।
ভালোর কোনও শেষ নেই। সুন্দরের সীমা বিস্তৃত। তাই অন্দর-মহলের প্রতিটি কোনায় শিল্পের ছোঁয়া দিতে ইন্টিরিয়র ডিজাইনারদের চাহিদা বাড়ছেই। শুধু বাসস্থান নয়, যে কোনও অফিস সেট আপ, বিজনেস সেট আপ, সবেতেই এখন ইন্টিরিয়র করার হিড়িক চােখে পড়ছে। শহর-মফস্বল, সর্বত্রই এখন এই পেশার জনপ্রিয়তা।
কারা পড়বে?
ঘর সাজানাের নেশা থেকে এই পেশায় আসা যেতে পারে। তবে তার সঙ্গে আরও কিছু যােগ্যতা থাকা দরকার। যেমন সৃষ্টিশীল মন, সৌন্দর্য কী, সে ব্যাপারে জ্ঞান থাকতে হবে, আঁকার প্রতি ঝোঁক, কাজে লেগে থাকার ক্ষমতা, কল্পনাশক্তি আর ধৈর্যশীল মন থাকলে ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং নিয়ে পড়া-শোনাে করে সহজেই চাকরি করা যায়। এই কোর্স করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট বিভাগ নিয়ে পড়া-শােনার দরকার নেই। যে কোনও শাখায় উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর এই কোর্স করা যেতে পারে। আর এই কোর্স যে কোন বয়সে করা যায়।
কাজের দুনিয়া
ঘর গোছানোর পেশাগত ডিগ্রিধারীরাই ইন্টিলরিয়র ডিজাইনার। সাধারণত, বাড়ি সাজানাের ব্যাপারে কমবেশি
ধারণা সকলেরই রয়েছে। তা হলে, ইন্টিরিয়র ডিজাইনার
দরকার কেন? অল্প জায়গাকে দক্ষতার সঙ্গে সাজিয়ে দিতে পারেন, এক্সট্রা ইনপুট দিয়ে, যেটা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। একেবারে নতুন আইডিয়া দিয়ে ঝাঁচকচকে ইন্টিরিয়র তৈরি করাই এক্সপার্টদের কাজ।
কোন জিনিসে ঘরে সুন্দর লাগবে, কোন রং ভাল খুলবে, ফার্নিচারের ডিজাইন কেমন হবে, ঘরের কোথায় কেমন আলো দিলে সৌন্দর্য আরও বেড়ে যাবে, জল ইলেকট্রিকের কানেকশন ঘরের ভিতরে কোনদিক থেকে কোথায় যাবে, সমস্তটাই নিখুঁত প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে করে দেন। ইন্টিরিয়র ডিজাইনাররা কোর্সেই স্কিল বাড়ে।
ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং কোর্স সাধারনত ডিগ্রি (তিন বছর) ও ডিপ্লোমা (দু' বছর) কোর্স হয়। কেউ চাইলে ছ'মাস বা এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্স করতে পারেন। গ্রাফিক্স ও
এসথেটিক্সের সাধারন কয়েকটা বিষয় দিয়ে পাঠ শুরু হলেও এর ভিতরেই থাকে প্রফেশনাল প্রাকটিস,এস্টিমেশন ও কস্টিং বা কমিউনিকেশনের মতাে ব্যাপার-গুলাে। এ ছাড়াও এখন ডিজাইনিংয়ের প্রায় সমস্ত বিষয়গুলি ডিজিটাল। তাই প্রযুক্তি-গত শিক্ষাও এই পড়া-শোনার অঙ্গ।
কোন্ সফটওয়্যার, কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, তা শেখানো হয় এই কোর্সে। কেবলমাত্র বিষয়গত শিক্ষাই নয় আসলে কাজ করতে গেলে ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে নিজেদের প্রস্তুত করা দরকার, তাও শেখানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোনও প্রজেক্ট প্রেজেন্ট করা, ক্লায়েন্টের সঙ্গে কমিউনিকেশন করার ব্যাপারেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই কোর্স কেউ যদি কলকাতার বাইরে বা দেশের বাইরে গিয়ে করে, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
প্রচুর সুযোগ
ইন্টিরিয়র ডিজাইনারদের চাকরির অভাব নেই। মন দিয়ে
করলে জগতে এদের চাহিদা প্রচুর। যে কোনও আর্কিটেকচার ও ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং ফার্মে কাজ করা যায়। কেউ চাইলে নিজস্ব ফার্মও করতে পারেন। কেউ কেউ নিজস্ব ব্যবসাতেও যুক্ত হন। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী কোর্স করতে করতেই বেসরকারি সংস্থায় ইন্টার্নশিপ করে তারপর সেখান থেকেই চাকরির অফার পেয়ে যায়। এ রাজ্যের পাশাপাশি অন্য রাজ্যেও কাজের সুযোগ অনেক। রাজ্যের বাইরে কাজ করলেও স্যালারি ভাল।
পড়ার সুযোগ
এক্সটিরিয়র ইন্টিরিয়র লিমিটেড, জর্জ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং, দ্য ভবানীপুর ডিজাইন অ্যাকাডেমি ছাড়াও এ রাজ্যে আরও কিছু ইনস্টিটিউটে ইন্টিরিয়র ডিজাইনিংয়ের কোর্স করা যায়। বেঙ্গালুরু মুম্বই, দিল্লিতেও অনেক ভাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.