দরিদ্র কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রকল্প চালু করেন যাতে বছরে ছয় হাজার টাকা অনুদান পাওয়া যায়। এই প্রকল্পে অনুদান পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত হলাে এতে সরকারি চাকুরিজীবী হওয়া যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক থেকে পঞ্চায়েত কর্মীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে এই প্রকল্পের টাকা। তবে এই বিষয়টি নজরে আসতেই টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কৃষি দপ্তর।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জন টাকা ফেরতের প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন। কাটোয়ার সহকারী কৃষি অধিকর্তা প্রলয় ঘােষ জানান, বেশ কয়েকজন চাকুরিজীবী পিএম কিষান সম্মান নিধির টাকা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কাজ চলছে সরকারি নির্দেশিকা মেনে।
এই প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী আয়করদাতা কৃষক, সরকারি চাকরি বা অবসরকালীন ভাতা পান এমন কোনও ব্যক্তি এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন না। এই প্রকল্পে অনুদান পেতে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন কৃষকরা।
আবেদনের সঙ্গে উপভােক্তাকে জমা করতে হয় একটি স্বঘােষণাপত্র। জানাতে হয় উপরােক্ত বিধিনিষেধের আওতায় তিনি পড়েন না। এরপর অনুদান আসে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, সরকারি চাকুরি-জীবীদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে পড়েছে।
বিষয়টি নজরে আসতেই ওই ব্যক্তিদের চিঠি পাঠিয়েছে কৃষি দপ্তর। সাত দিনের মধ্যে ওই টাকা ফেরতের নির্দেশ কৃষি দপ্তরের জন্য বলা হয় চিঠিতে। কীভাবে টাকা ফেরত দিতে হবে চিঠিতে তাও লিখে দেওয়া হয়।
কাটোয়া দুই ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা সুমনা মণ্ডল বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় আসার জন্য কৃষকরা
প্রথমে অনলাইনে আবেদন করেন পরে আমাদের কাছে আবেদনপত্র জমা দিয়ে যান।
আবেদনকারীদের স্বঘোষণাপত্র জমা দিয়ে জানাতে হয় যে, তাঁরা কেউ সরকারি চাকরি করেন না বা তাঁরা একই পরিবার-ভুক্ত নন। সেই মতাে আমরা পরবর্তী প্রক্রিয়া করি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে অনেক ভুল তথ্য দিয়েছেন। তাই তাঁদের থেকে টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে।
প্রশান্ত মণ্ডল নামে এক প্রাথমিক শিক্ষক জানান, ‘আমি আবেদন করলেও স্বঘোষনাপত্র জমা দিইনি, তবুও আমার একাউন্টটে টাকা এসেছে। আমি টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি যখন জানতে পারি বিষয়টি বেআইনি।
পরাশর সাহা নামে আর এক কৃষক বলেন, আমার ছেলে চাকরি করে। না জেনে সে আবেদন করেছে ফেলেছে।যখন জানতে পারা যায় যে এটা চাকরি করলে পাওয়া যায় না। তখন টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য,কাটোয়া মহকুমার পাঁচটি ব্লকে মােট ৫০ হাজার ২৭৬ জনকে পিএম কিষান সন্মাননিধি প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরতের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে ২১৩ জনকে। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৯ জন টাকা ফেরত দিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.