Watermelon farming জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর মরশুমি ফল তরমুজ চাষের খুঁটিনাটি। - Probaho Bangla

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

Watermelon farming জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর মরশুমি ফল তরমুজ চাষের খুঁটিনাটি।

Watermelon cultivation

তরমুজ এ রাজ্যের পাশাপাশি গােটা দেশের কাছে জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর মরশুমি ফল হিসেবে খ্যাত।গ্রীষ্মকালীন এই ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে ৯৫ শতাংশ জল, প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং খনিজ লবন সহ অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা মানবদেহে রােগ প্রতিরােধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষাবাদে বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১২ টন ফল আনায়াসেই ফলানাে সম্ভব।



দীর্ঘদিন যাবত কোচবিহার কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানী-দের তত্ত্বাবধানে উন্নত প্রযুক্তি ও ভালাে জাতের তরমুজ বীজ প্রদানের মাধ্যমে তরমুজ চাষিদের আর্থিক উন্নতি বাড়ানাের বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

তরমুজের উন্নত জাতগুলির মধ্যে মেঘনা, কিরণ সুপ্রীত,
অর্ক মুথু এবং অর্ক মাধুরী ইত্যাদি রয়েছে। তরমুজ চাষে দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি উত্তম। বিঘা প্রতি সর্বোচ্চ
১০০-১২০ গ্রাম বীজ যথেষ্ট। জৈব ছত্রাকনাশক ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি অথবা কার্বেনডাজিম দিয়ে বীজ শােধন করে ছায়ায় শুকাতে হবে। এরপর বীজগুলি মূল জমির মাদায় বসাতে হবে।

তরমুজ বীজ সাধারণত ফান্তুন মাস নাগাদ লাগানাে হয়। অগ্রিম চাষাবাদে চাষিরা যাতে অধিক লাভবান হতে পারেন সেজন্য পৌষ মাসেই বীজ মাদায় বপন করা যেতে পারে অথবা পােলি-ট্রে বা পলিব্যাগে অগ্রিম চারা তৈরি করে লাগানাে যেতে পারে।

মূল জমির বেড়গুলি প্রয়ােজনমতাে লম্বা করলে ভালাে। এক মিটার চওড়া বিশিষ্ট (২৫-৩০ সেমি উঁচু)। মাদায় লাগালে লাইনের দূরত্ব হবে (১ X ১) মিটার। উন্নত পদ্ধতিতে মূল জমিতে বেড তৈরি করে তার ওপর মালচিং পদ্ধতি বা পলিথিনের আচ্ছাদন (১ মিটার চওড়া এবং ২৫ মাইক্রন) দেওয়া হয়। এতে আগাছার উপদ্রব কমে।পাশাপাশি জল সাশ্রয় হয়। বীজ বােনার পর মাদা খর দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। মূল জমিতে ১০০ কুইন্টাল পচা গােবর সারের সঙ্গে ২ কেজি বােরণ, ২ কেজি জিঙ্ক, ২ কেজি ম্যাগনেসিয়াম সালফেট একই সঙ্গে দিতে হবে ১২ কেজি ইউরিয়া ও ৫০ কেজি ফুল ফসফেট এবং ৭ কেজি পটাশ সার প্রতি বিঘায় প্রয়ােগ করতে হবে। সবমিলে চাপান সার ৪ বার প্রয়ােগ করা আবশ্যিক। চারা গাছের বয়স ২০ থেকে ২৫ দিনে ফুল ধরার পর, ফল ধরার সময় ও ফল তােলার ২৫ দিন আগে প্রতিবার ৮ কেজি ইউরিয়া ও ৫ কেজি পটাশ প্রয়ােগ করতে হবে। মালচিং বা পলিথিন আচ্ছাদনে চাষ করলে পুরাে মূলসারের মিশ্রণ বেড তৈরির সময় প্রয়ােগ করে পলিথিন দিয়ে ঢাকতে হবে।

অন্যদিকে, মাদায় চাষ করলে ১০০ গ্রাম ফসফেট, ১৫ গ্রাম পটাশ চারা লাগানাের আগ মুহূর্তে মাদা প্রতি গােবর সারের সঙ্গে দিতে হবে। পরে চাপান সার হিসেবে ২৫ গ্রাম ইউরিয়া, ১০ গ্রাম পটাশ চার বার দিতে হবে।

তরমুজ চাষের শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করা বাঞ্ছনীয়। গাছ থেকে ভালাে মানের ফল পেতে গাছে ৪-৫টির বেশি ফল রাখা যাবে না এবং ডাল ছাঁটাইয়ের পরবর্তীতে কাটা জায়গায় কপার অক্সিক্লোরাইডের পেজ লাগিয়ে রাখতে হবে।

তরমুজে থ্রিপস বা চুসি পােকার উপদ্রব দেখা দেয়। এই পােকার আক্রমণে ডগা মােটা হয়ে যায়। আক্রান্ত গাছে কোনও ফুল বা ফল ধরে না। পাতার নীচে পিঠে জাব পােকার আক্রমণ হয়। জাব পােকা তরমুজের মােজাইক বা সাহেব রােগ ছড়ায়। এছাড়াও খুব ছােট গাঢ় নীল রঙের পােকা চারা অবস্থায় পাতা ফুটো করে দেয়।প্রতিকারে নীল রংয়ের এবং জাব পােকার জন্য হলুদ রঙের আঠালাে ফাঁদ বিঘায় অন্তত দু'তিনটি জায়গায় বসাতে হবে। পাশাপাশি নিম তেল ১৫০০ পিপিএম ৪ থেকে ৫ মিলি প্রতি লিটার জলে ১০ থেকে ১৫ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

রাসায়নিক কীটনাশক যেমন ফিপ্রােনিল, সালফ্লক্সাক্লোর ব্যবহার করতে পারেন। তরমুজের রােগগুলির মধ্যে পাতায় বিভিন্ন ছত্রাকঘটিত দাগ বা কাণ্ডে পচন এবং ব্যাকটিরিয়া ঘটিত ফলের পচন দেখা যায়। নিয়ন্ত্রণে ক্লোরােথ্যালােমিন ১ মিলি, কপার অক্সিক্লোরাইড ৪ গ্রাম এবং টেবুকোনাজল ১ মিলি প্রতি লিটার জলে উল্লেখিত অনুপাতে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে স্প্রে করতে হবে।

সাধারণত তিন-চার মাসে ফল তােলা হয়। তরমুজের গায়ে যদি আঙুল দিয়ে টোকা দেওয়া হয়, তবে টপ টপ আওয়াজ হলেই বুঝতে হবে ফল পরিপক্ক, খাবার উপযােগী হয়ে গিয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in the comment box.

Post Top Ad