নতুন বছরে বদলে যাচ্ছে অনলাইনে কার্ড ব্যবহারের কিছু নিয়ম। অনেকেই নিজের ব্যাঙ্কের থেকে এসএমএস (SMS) পেয়েছেন এই পরিবর্তন সম্পর্কে। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারেননি এই পরিবর্তন কী এবং কেন। বাস্তবে এই বদল হচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ এর নির্দেশিকা অনুযায়ী।
এতদিন ধরে আমরা যখন অনলাইনে কেনাকাটা করেছি, জেনে বা না জেনে কার্ডের তথ্য সেভ করেছি বিক্রেতার ওয়েবসাইটে। অনেক সময়েই দেখা যায় কোনও কারণে এই সাইটের সুরক্ষা ভেঙে গেলে অর্থাৎ সাইট হ্যাক হলে বিক্রেতার বিভিন্ন তথ্যের সঙ্গে ক্রেতার কার্ড নাম্বারও দুষ্ট-চক্রের হাতে চলে যায়। সেখান থেকে বেআইনি কেনাকাটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ভারতীয় কার্ড হােল্ডারদের এই ধরনের বিপদের হাত থেকে বাঁচানাের জন্যই ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টোকেনাইজেশন (Card-on-File Tokenisation) পরিষেবা চালু করার নির্দেশিকা জারি করেছেন।
এবার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, তাহলে কি ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে কার্ডের টোকেন তুলতে হবে না কি?
উত্তর-না, একেবারেই না। পুরােটাই অনলাইনে, এমনকী অনেকেই বুঝতেই পারবেন না এই পরিষেবা কখন, কীভাবে ব্যবহার শুরু করলেন।
এবার বােঝার চেষ্টা করা যাক টোকেনাইজেশন কী?
আমাদের বাঙালিদের অনেক ডাকনাম থাকে। বাবা-মা আদর করে একটা নামে ডাকেন। প্রিয় কোনও মাসি-পিসি আদরের এক 'ডাকনাম দেন। স্কুলের বন্ধুরা একটা ডাকনাম বানায়, কলেজের বন্ধুরা আর একটা। আর অফিসের জুনিয়ররা আড়ালে আর একটা নাম দেয়। এই ডাকনামগুলো আলাদা আলাদা হলেও মানুষটা কিন্তু একই থাকে। কার্ডের টোকেনাইজেশনও অনেকটা এরকমই।
ষােলাে সংখ্যার কার্ডের নাম্বারের বদলে এক একটি বিক্রেতার ওয়েবসাইটে এবার সেভ করা হবে কার্ডের ডাকনাম অর্থাৎ কার্ডেন টোকেন। কার্ডের নম্বরের বদলে কার্ড নাম্বার, টোকেন রিকোয়েস্টর, বিক্রেতার জন্য নির্দিষ্ট ক্রমসংখ্যা। এই সব মিলিয়ে মিশিয়ে তৈরি হবে এমন এক টোকেন যেটা অন্য কোনও টোকেনের সঙ্গে কখনই এক হবে না। আবার ব্যাঙ্কের সেভ করা হবে কার্ডের ডাকনাম অর্থাৎ কার্ডেন টোকেন।কার্ডের নম্বরের বদলে কার্ড নাম্বার, টোকেন রিকোয়েস্টর, বিক্রেতার জন্য নির্দিষ্ট ক্রমসংখ্যা—এই সব মিলিয়ে মিশিয়ে তৈরি হবে এমন এক টোকেন যেটা অন্য কোনও টোকেনের সঙ্গে কখনই এক হবে না।আবার ব্যাঙ্কের সিস্টেম এই টোকেন থেকে সহজেই কার্ড নাম্বারকে চিনে নিতে পারবে। অর্থাৎ একটি কার্ডের নাম্বার amazon-এ যেভাবে থাকবে, সেই কার্ডের নম্বরই ফ্লিপকার্টে অন্যভাবে থাকবে এবং এই দুটি কখনও -ই, কোনও ভাবে এক হবে না। একটি কার্ডে এরকম ৯৯ টি পর্যন্ত টোকেন হতে পারে।
ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট টোকেনাইজেশন চালুর জন্য নিজেদের তৈরি করে নিয়েছে, তবে অধিকাংশ সাইটই তা এখনও করে উঠতে পারেনি। তাছাড়াও NFC আছে এরকম ফোনে বা ওয়ারেবল ডিভাইস স্যামসং পে, গুগল পে, apple pay ইত্যাদি app ও টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগে থেকেই। ব্যাঙ্ক ও নেটওয়ার্ক (পে, ভিসা, মাস্টারকার্ড ইত্যাদি) ছাড়াও আরও বেশ কিছু সংস্থা কার্ডের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে কাজ করে, যেমন রিওয়ার্ড দেয় যারা বা কার্ডের কেনা-কাটার হিসাব করে যারা এদের প্রস্তুত হওয়ার সময় দিতে ১ জানুয়ারি থেকে কার্ড অন ফাইল’টোকেনাইজেশন চালু করার কথা থাকলেও ২৩ ডিসেম্বর সার্কুলার করে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দু’মাস অতিরিক্ত সময় দিয়েছেন সকলকে প্রস্তুত হতে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.