চতুর্থ শ্রেণির (Group-D) কর্মী নিয়ােগে আবারো দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। অভিযােগের ভিত্তিতে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে নিয়ম অমান্য করে যে ৫৭৩ জনকে চাকরিতে নিয়ােগ করা হয়েছে তাঁদের বরখাস্ত করতে হবে। আদালত মনে করছে ওই নিয়ােগে দুর্নীতি হয়েছে। এমনকি আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এত দিন পর্যন্ত ওই কর্মীরা যা বেতন পেয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেই কাজ জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকদের সম্পাদনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, উক্ত ঘটনার তদন্তে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠন করেছিল সেই কমিটিকেও একক বেঞ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপাের্ট দিতে বলেছে।
Group-D পদে নিয়ােগ-দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে ঘটিত ওই কমিটি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি তদন্তের প্রাথমিক রিপাের্ট পেশের নির্দেশ আদালতের। দুর্নীতি করে ২৫ জনকে নিয়ােগ করা হয়েছে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে বলে মামলাকারীদের অভিযােগ। নথি খতিয়ে দেখে আদালত তাঁদের বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেয়। পরবর্তী সময়ে আরও ৫০০-রও বেশি পদে অস্বচ্ছ নিয়ােগের অভিযােগের ভিত্তিতে ওই কর্মীদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী সুদীপ্ত সেনগুপ্ত বলেন, আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে এই নিয়োগে। জনগণের টাকা থেকে এ রকম দুর্নীতি হতে পারে না তাই বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
মামলাকারীদের অভিযােগ ছিল, ২০১৯ সালের মে মাসে এসএসসি রুপ ডি-র মেধা তালিকার মেয়াদ শেষ হয়েছে মেয়াদ পেরোনোর পরেও। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে অসংখ্য নিয়ােগ হয়েছে বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত প্রায় এক হাজার অভিযােগ শুধুমাত্র কলকাতা হাইকােটেই দায়ের হয়েছে।
SSC-র তরফেই মামলার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানাে হয়, ২০১১ সালের মে মাসের পর তারা একজন চাকরিপ্রার্থীর নিয়ােগের জন্যও সুপারিশ করেনি।
এই হলফনানার উল্লেখ করে এ দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, SSC যেখানে হলফনামায় এই দাবি করছে, সেখানে ভুয়াে নিয়ােগের অভিযােগের সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশের অবকাশই থাকে না।
আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যদি কোনও নিয়োগ হয়ে থাকে তাহলে তা বেআইনি ভুয়ো নিয়ােগের অভিযােগ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে একটি বিচার-বিভাগীয় অনুসন্ধান কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুসন্ধান কমিটিকেও ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে গ্রুপ-ড়ি পদে ১৩ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়। সেই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালে, কিন্তু তারপরেও একাধিক নিয়োগ হয়েছে। মােট ২৫ জনের সুপারিশের তথ্য আসে আদালতের হাতে। এই নিয়েই ব্যাখ্যা তলব করে হাইকোর্ট।
দুর্নীতির অভিযোগে প্রথমে এই ২৫ জনের বেতন বন্ধের
নির্দেশ দেয় আদালত। তারপর আরও অনেকেরই নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.