সম্প্রতি একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, হটডগ, বেকন কিংবা অন্যান্য প্রােসেসড মিট যদি নিয়মিত খাওয়া হয় এবং তার সঙ্গে নিয়ম করে দু থেকে তিন পেগ বিয়ার, তাহলে ভবিষ্যতে কোলন ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। এছাড়া মাত্রাছাড়া রেডমিট (যেমন প্রতি সপ্তাহে ৫০০ গ্রাম বা তার অধিক,মানে বিফ বা পৰ্ক) খেলে, সঙ্গে ওবেসিটি থাকলে, সেখান থেকেও বাড়ে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি।
আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ (AICR) এবং ওয়ার্ল্ড ক্যানসার রিসার্চ ফান্ডের (WCRF) যৌথ সমীক্ষা প্রমাণ করে যে, হােল গ্রেনস সমৃদ্ধ খাবার যেমন হােল হুইট পাউরুটি, ব্রাউন রাইস ডায়েটে রাখলে, তা থেকে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি আবার অনেকটা কমে, এবং গবেষকরা বারে বারে বলছেন এর সঙ্গে অবশ্যই শারীরিকভাবেও পরিশ্রম করতে হবে, তবেই গিয়ে পুরােপুরি উপকার পাওয়া যাবে।
হার্ভার্ড টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের Harvard T.H. Chan School of Public Health অধ্যাপক গবেষক এডওয়ার্ড এল জিওভানুচ্চির মতে, বর্তমান বিশ্বে যেসব ক্যানসার খুব বেশি কমন হয়ে গেছে তার মধ্যে অন্যতম হল কোলন ক্যানসার। কিন্তু আমাদের গবেষণা বলছে, একটু সচেতনতা অবলম্বন করলেই আশ্চর্যজনকভাবে এই ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাকে প্রতিহত করা যায়।
আমাদের বিস্তারিত বিশ্লেষণ থেকে আমরা উপসংহারে এসেছি ডায়েটে রদবদল আর নিয়মিত শরীরচর্চা কোলন ক্যানসারের উপর ভীষণভাবেই প্রভাব ফেলে।ভুলভাল ডায়েট, ওজন, শারীরিক পরিশ্রম কীভাবে সারা বিশ্বের মানুষের উপর কোলন ক্যানসারের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছিল, তা নিয়ে গবেষকরা বিশদে দীর্ঘকাল ধরে গবেষণা করেছেন।
বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৯ মিলিয়ন ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ৯৯ টি আলাদা সমীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশেরই কোলন ক্যানসার ছিল এবং অদ্ভুতভাবে তাদের খাদ্যতালিকা বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে রেড বা প্রােসেসড মিট, বার্গার, হটডগের মতাে খাবারের আধিক্য, সঙ্গে তারা অপরিমিত বিয়ার ও অন্যান্য পানীয় খেয়েছেন। তাহলে এর থেকে সমাধানের কী উপায় আছে?
ওই রিপাের্টে বলা হয়েছে যে, প্রতিদিন যদি ৯০ গ্রাম করে হােল গ্রেনস সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যায়, তাহলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে প্রায় ১৭ শতাংশ পর্যন্ত।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে বাওয়েল মুভমেন্ট ক্লিয়ার হয় ফলে কোলনের উপর চাপ পড়েনা, কোলন সুরক্ষিত থাকে, ক্যানসারের ঝুঁকিও ভবিষ্যতের জন্য অনেকটা কমে। এমনকী যাঁরা বেশি করে শারীরিক পরিশ্রম করেন, তাদের তুলনায় কম পরিশ্রম করা ব্যক্তিদের কোলন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেশি থাকে, তার সঙ্গে প্রােসেসড মিট খাওয়া, অ্যালকোহল সেবন কমালে উপকার পাওয়া যাবে বই কী।
এআইসিআর (AICR)-এর পুষ্টিবিদ অ্যালিস বেন্ডারের মতে, 'রিফাইন্ড গ্রেনসের বদলে বেশি করে হােল গ্রেনস খাবার খান, বিশেষত,উদ্ভিজ্জ প্রােটিন, সবুজ শাকসবজি, ডাল, ফলমূল, এগুলির মধ্যে একদিকে যেমন অ্যান্টি কার্সিনােজেনিক উপাদান (ক্যানসার বিরােধী উপাদান), তেমনি তা ওজন নিয়ন্ত্রণেরও সহায়ক। এর ফলে ভবিষ্যতে কোলন ক্যানসার হওয়া অনেকটাই আটকানাে
যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.