'কাশ্মীর ছাড়ো নয়তো মরো!' কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উদ্দেশে হুমকি চিঠি জঙ্গি সংগঠনের। - Probaho Bangla

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২

'কাশ্মীর ছাড়ো নয়তো মরো!' কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উদ্দেশে হুমকি চিঠি জঙ্গি সংগঠনের।

Either leave Kashmir or die to Kashmiri Pandit

জম্মু ও কাশ্মীর : কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোটের তোড়জোড় শুরু হতেই ফের সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের প্রতি ঘৃণা। গত সপ্তাহে কাশ্মীরে এক তরুণ পণ্ডিতকে গুলি করে খুন করেছিল জঙ্গিরা। এবার সরাসরি হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হল। লস্কর-ই-ইসলাম (Lashkar-e-Islam) নামে এক জঙ্গি সংগঠনের প্যাডে ছাপার অক্ষরে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে, "সমস্ত শরণার্থী এবং আরএসএস এজেন্টরা কাশ্মীর ছাড়ো, নয়ত মরবে। কাশ্মীরি পণ্ডিতরাও ছাড় পাবে না। নিজেদের নিরাপত্তা দ্বিগুণ, তিনগুণ করলেও মরবে।"


রবিবার এই হুমকি চিঠি ঘিরে উপত্যকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, পুলওয়ামার শরণার্থী কলোনির প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে চিঠিটি লেখা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত চিঠিতে স্পষ্ট হুমকি, "কাশ্মীরি পণ্ডিতরা কাশ্মীরকে ইজরায়েল বানাতে চায়, মুসলিমদের খুন করতে চায়। তাদের মরতে হবে। নিরাপত্তা বাড়িয়েও কোনও লাভ হবে না। এমনই লেখা হয়েছে চিঠিতে। লস্কর-ই-ইসলামের লোগো, নাম লেখা প্যাডেই চিঠিটি লেখা হয়েছে। তাতেই মনে করা হচ্ছে, ভুয়ো নয়, এ ধরনের সংগঠনের বাড়-বাড়ন্ত হচ্ছে কাশ্মীর উপত্যকায়।

বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, ফের সেই কালো দিন
ফিরছে ভূস্বর্গে। গত বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের বদগাঁওয়ের অফিসে ঢুকে রাহুল ভাট নামের এক কাশ্মীরি পণ্ডিতকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। এর দায় স্বীকার করে 'কাশ্মীর টাইগার্স' নামে একটি সংগঠন। প্রতিবাদে পরদিন থেকেই বিক্ষোভে শামিল হন সেখানকার কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের উদাসীনতার ফলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের। এদিনের হুমকি চিঠি আসতেই স্বভাবতই আতঙ্ক আরও বেড়ে যায় উপত্যকায়।

জম্মু-কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পর বহু কাশ্মীরি পণ্ডিত কাশ্মীর উপত্যকায় নতুন করে ফিরতে শুরু করেন। ১৯৮০-র দশকে জন্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (JKLF)-র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সময় থেকেই উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের তাড়ানো শুরু হয়। পাক সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী জেনারেল জিয়া উল-হকের আমলে ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI) ভারত তথা কাশ্মীরের ক্ষেত্রে শুরু করে ‘অপারেশন টোপাজ'। ভারতের দীর্ঘস্থায়ী রক্তমোক্ষণ শুরু সেই থেকে। কারণ, জিয়া উল-হকরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কখনই ভুলতে পারেনি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর বহু কাশ্মীরি পণ্ডিত আশায় বুক বাঁধেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, এখন থেকে কাশ্মীর ও লাদাখে কাশ্মীরি পণ্ডিত-সহ শিখ ও গোর্খারা নিশ্চিন্তে বসবাস শুরু করতে পারেন। সেইমতো বহু অবসরপ্রাপ্ত গোর্খা ফৌজি কাশ্মীরে বসবাস শুরু করেন। কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ পরিবারগুলিও ফিরতে থাকে। কিন্তু রাহুল ভাট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁরা আবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

পাকিস্তানি ISI এর মদতে তাঁদের উপত্যকা থেকে সরাতে নতুন উদ্যমে নেমেছে কট্টরপন্থী মুসলিম সন্ত্রাসবাদীরা। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in the comment box.

Post Top Ad