জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। আর মাতলা নদীর ওপারে অপেক্ষা করছেন প্রেমিক, তাই সুন্দরবনের বাঘ-কুমিরের ভয়েও পিছিয়ে যাননি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার শ্যামনগরের তরুণী কৃষ্ণা রাণী মণ্ডল।
ওপারে থাকা প্রেমিককে বিয়ে করতে টানা এক ঘণ্টা ধরে মাতলা নদী সাঁতরে পৌঁছোন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কৈখালীতে। সেখান থেকে তাকে গাড়িতে করে নিয়ে আসেন প্রেমিক অভীক মন্ডল। নদী-জঙ্গল আর বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে কালীঘাটে গিয়ে বিয়ে করে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে সংসার পাতেন। পরে প্রেমের কারণে জীবন বাজি রাখার এই গল্প লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এরপর এ গল্প পৌঁছে যায় পুলিসের কানেও।
সোমবার রানিয়া এলাকায় হানা দেয় স্থানীয় নরেন্দ্রপুর থানা পুলিস। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে তারা কৃষ্ণাকে গ্রেফতার করে। গতকাল তাকে আদালতে তোলা হয়। ভারতীয় প্রায় সব সংবাদমাধ্যম এ খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় পুলিসের বরাত দিয়ে খবরে জানানো হয়, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের বাসিন্দা কৃষ্ণা মণ্ডলের সঙ্গে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার নরেন্দ্রপুর থানার রানিয়া এলাকার যুবক অভীক মণ্ডলের পরিচয় ফেসবুকে।
ছয় মাস আগে ফেসবুকে পরিচয়ের পর মেসেঞ্জারে কথোপ-কথন হয় দুজনের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতে অভীককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন কৃষ্ণা। কিন্তু ভারতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট বা ভিসা নেই তার কাছে। শেষ পর্যন্ত সুন্দদরবনের বিপজ্জনক জঙ্গল আর নদী পেরিয়ে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেন ঐ তরুণী।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সপ্তাহে সুন্দরবনের ভয়ংকর জঙ্গল পেরিয়ে নেমে পড়েন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মাতলা নদীতে। যে নদীতে যখন তখন বাঘ-কুমিরের মুখে পড়ার আশঙ্কা ছিল তার। কিন্তু বিপদের তোয়াক্কা না করে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নদী সাঁতরে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কৈখালীতে ঢুকে যান কৃষ্ণা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.