কলকাতা : মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাশে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পর বেকায়দায় পড়ল মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন (Madrasah Service Commission)।
এবার মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে উঠলো বেনিয়মের অভিযোগ। এজন্য এদিন মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাশ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষতি-পূরণ দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিন এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি এজলাসে জানান, “সাপের লেজ দিয়ে কান
চুলকোবেন না।” একের পর এক শিক্ষক নিয়োগের মামলায় কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Gangopadhyay)।
গত সোমবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষক
নিয়োগের ২৬৯ জন টেট পাশ না করেও চাকরি পেয়েছেন। এঁদের বেতন বন্ধের পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে পরের দিনেই অর্থাৎ মঙ্গলবার এবার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে জরিমানা করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম করা হয়েছে। অভিযোগ, ' উপযুক্ত প্রার্থীদের অগ্রাধিকার না দিয়ে কম মেধার প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে মাদ্রাসা কমিশন। কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতেই কম মেধার প্রার্থীরা চাকরি পেয়েছেন'।
আদালত সূত্রে প্রকাশ, গত ২০১০ সালের মাদ্রাসা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অর্থাৎ যাঁরা ডিএলএড (DELED) এবং বিএড (BED) পাশ করেছেন তাদেরকে চাকরিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে যে নিয়োগ হয়েছে তাতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আকমল হোসেন সহ সাতজন চাকরিপ্রার্থী নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার শুনানি পর্বে এদিন আদালত জানায় -’ কমিশন কি সংবিধানের উপরে ?'
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি এদিন বলেন, - 'সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকোবেন না'। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। আর্থিক জরিমানার ৭০ হাজার টাকা ১৫ দিনের মধ্যে সাত আবেদনকারীর মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। পাশাপাশি বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন,-'ভবিষ্যতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের সুযোগ দিতে হবে'।
বিচারপতি যেভাবে এসএসসি নিয়োগ থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলা গুলিতে সিবিআই তদন্ত নির্দেশ দিচ্ছেন তাতে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের অনেকেই চাপে রয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.