তিরুবনন্তপুরম : দেশ ও কেরলের রাজনীতির আঙিনায় সাড়া ফেলে দেওয়া কেরলের সোনা পাচার কাণ্ডে এবার সরাসরি নাম জড়িয়ে পড়লো কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan)-এর। শুধু তিনিই নন, তাঁর স্ত্রী-কন্যার দিকেও আঙুল তুলেছেন এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশ। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর পরিবার ও পদস্থ কর্তারা সরাসরি এই কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। ব্যাগভর্তি টাকা সরাসরি পাঠানো হত তাঁদের কাছে। যার জেরে ক্ষমতায় থাকা দেশের একমাত্র রাজ্যেও চাপে পড়ে গেল সিপিআইএম (CPIM)।
স্বাভাবিকভাবেই তাঁর ইস্তফা চেয়ে চাপ বাড়তে শুরু করেছে বিরোধীরা। এই ঘটনায় উল্লসিত বিজয়ন-বিরোধী লবিও। যদিও অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন' ও ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত' বলে খারিজ করেছেন বিজয়ন।
২০১৯ সালের ৫ জুলাই কোচি শুল্ক দফতর বিমানবন্দর থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা মূল্যের ৩০ কেজি সোনা (২৪ ক্যারেট) আটক করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে কূটনীতিবিদদের জিনিসপত্রের সঙ্গে লুকিয়ে ওই সোনা নিয়ে আসা হয়। তিরুবনন্তপুরমে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কনস্যুলেটের এক প্রাক্তন আধিকারিকের ঠিকানায় ওই সোনা পাঠানো হয়েছিল। এই ঘটনায় স্বপ্না সুরেশের নাম উঠে আসে। প্রথমে গা ঢাকা দিলেও পরে তিনি ও তাঁর সঙ্গী সন্দীপ নায়ার গ্রেফতার হন। বর্তমানে তাঁরা জামিনে মুক্ত।
#Kerala CM #PinarayiVijayan involved in gold smuggling case, Customs cites one of the key accused in HC | #KeralaGoldSmugglingCasehttps://t.co/1ZEZhltt4b
— IndiaToday (@IndiaToday) March 5, 2021
সোমবার ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ড-বিধির ১৬৪ নম্বর ধারায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন স্বপ্না সুরেশ। কোনও রাখঢাক না রেখে সংবাদ-সংস্থাকে তিনি বলেন, এই পুরো ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর স্ত্রী কমলা, কন্যা বীণা, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব নলিনী নেট্টো, বিজয়নের প্রাক্তন অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব সি এম রবীন্দ্রন এবং প্রাক্তন শিক্ষমন্ত্রী কে টি জলিলের যে ভূমিকা রয়েছে, তা আমি স্পষ্টভাবেই আদালত-কে জানিয়েছি। নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছি কোর্টে।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সোনা পাচার কাণ্ডের বিস্তারিত ঘটনা তিনি প্রকাশ্যে জানাতে পারছেন না। কিন্তু আগামী দিনে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য তিনি ফাঁস করবেন বলে দাবি করেছেন স্বপ্না। তাঁর দাবি, ২০১৬-য় বিজয়ন যখন প্রথমবার আমিরশাহি গিয়েছিলেন, তখন থেকেই এই পাচার পর্বের শুরু। রাজ্যের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এম শিবশংকরের নির্দেশে স্বপ্নাই দূতাবাসের মাধ্যমে সফরের ব্যবস্থা করেন। পরের দিন শিবশংকর ফোন করে জানান, মুখ্যমন্ত্রী ব্যাগ ফেলে এসেছেন। সেটি পাঠাতে হবে। দূতাবাসের স্ক্যানারে দেখা যায়, ব্যাগটি টাকায় ভর্তি।
স্বপ্নার আরও দাবি, প্রায়শই আমিরশাহির কনস্যুলেট জেনারেলের বাড়ি থেকে ‘ধাতব পদার্থ’ বোঝাই বিরিয়ানির হাঁড়ি যেত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। সেটাও হয়েছে শিবশংকরের নির্দেশে। জেরায় তদন্তকারী সংস্থার কাছে এ নিয়ে তিনি বিস্তারিত জানিয়েছেন। স্বপ্নার দাবি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন শিবশংকর।
অন্যদিকে, কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেছেন নেট্টো। যদিও স্বপ্নার দাবি, স্বেচ্ছাবসর নিয়ে তাঁর সঙ্গে
আমিরশাহিতে বাকি জীবন কাটাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন শিবশংকর এবং এই প্রাক্তন আমলা তাঁর জীবন ধ্বংস করে দিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.