সঙ্ঘ পরিবারের দিক থেকেও দীর্ঘদিনের দাবি ছিল CAA নিয়ে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এ নিয়ে বহু আন্দোলনও করেছে। তার প্রেক্ষিতেই নরেন্দ্র মোদী ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে এই আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। গত সোমবার উক্ত আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে পরিষদের বাংলার দায়িত্ব প্রাপ্ত সর্বভারতীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, "নাগরিকত্ব নিয়ে কাউকে ভুল বোঝানো ঠিক হবে না। বরং, সকলে যাতে নাগরিকত্ব পান সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে আসা মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগ। "বনগাঁ লোকসভা এলাকাতে তো বটেই মতুয়া অধ্যুষিত অন্যান্য জায়গাতেও এ নিয়ে উৎসব শুরু হয়ে যায়।
লোকসভার প্রার্থী তথা রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ
সরকার ঢোল বাজাতে বাজাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। আর বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া সমাজের নেতা শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) সল্টলেকে বিজেপির রাজ্য দফতরে এসে অন্য নেতাদের মিষ্টিমুখ করান। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, "একটা ইতিহাস তৈরি হল আজ। আজ থেকে ১০০ বছর পরে সরকার বদলে যেতে পারে কিন্তু কেউ উদ্বাস্তু হয়ে আসা মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না। ভবিষ্যতের জন্য বড় নিরাপত্তার গ্যারান্টি মিলল।"
'কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি জারির পরে পরেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) সহ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডলে 'হরি বোল' লিখে মতুয়া সমাজের দেওয়া কথা রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, "মোদীজীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। ১৯৪৫ সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবিতে সরব হয়েছেন। আজ অপেক্ষার অবসান হল।"
মোদীর গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি।
— Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) March 11, 2024
১৯৪৫ সাল থেকে ধর্মীয় কারণে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী; মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রত্যেক ব্যক্তি সমনাগরিকত্বের দাবি তে সোচ্চার হয়েছেন।
আজ অপেক্ষার অবসান হল।
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের (CAA) নোটিফিকেশন জারির মাধ্যমে এই আইন কার্যকর হবে… pic.twitter.com/25Nm5Oagz1
প্রসঙ্গত, আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, "ছেলের হাতে মোয়া? কাউকে নাগরিকত্ব দিতে পারবে না। জাস্ট শো অফ! বলবে, 'আপনারা পোর্টালে নাম লেখান। তখন সব ধর্মের মানুষই নাম লেখাবেন। কিন্তু সেই নাম আদৌ কার্যকর হবে? একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, "এ জন্যই কি ভাই, নমঃশূদ্রদের আধার কার্ড বাতিলের চক্রান্ত হয়েছিল? কিন্তু আমরা তো সবাই নাগরিক। ভোট আজ আছে। কাল ফুরিয়ে যাবে। আর CAA একটা ছলনা। আমি বিশ্বাস করি বাংলায় যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁরা সবাই এ রাজ্যের নাগরিক। এর জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা বলছেন কিন্তু তিনি কি এই জবাবটা দেবেন পাসপোর্ট বানানোর সময়ে তাঁর পুলিশ মতুয়া সমাজের সদস্যদের থেকে কেন ১৯৭১ সালের আগের জমির দলিল চায়?” এর পরেই তিনি বলেন, "আজ থেকে ১০০ বছর পরে কেউ প্রশ্ন তুলবেন কি না কথা দিতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী? আজ উদ্বাস্তু পরিবারের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নাগরিকত্বের নিশ্চয়তার গ্যারান্টি দিল মোদী সরকার।"
রাজ্যের কারও নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারিরও জবাব দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, সিএএ-র মাধ্যমে কারও নাগরিকত্ব কাড়া হবে না। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.