মঙ্গলবার, বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, ৩ মাসের মধ্যে এই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে এত বছর বাদে চাকরি পাওয়ার পর পুরোনো বকেয়াসহ অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধের দাবি করতে পারবেন না নিয়োগ পাওয়া আদালত জানিয়েছে, বর্তমানে হাওড়ায় শূন্যপদ ১৫১। অবিলম্বে এঁদের নিয়োগ দিতে হবে। বাকি মতোই সুবিধে পাবেন তাঁরা। শিক্ষকরা নতুন চাকরিপ্রাপকের ২৫০ জনের চাকরি ভবিষ্যতে তৈরি হওয়া শূন্যপদ থেকে ৩ মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।
দীর্ঘদিন আইনি লড়াইয়ের পর বঞ্চিত প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশে খুশি মামলাকারীদের আইনজীবী রবিলাল মৈত্র, ফিরদৌস শামিমরা।
এদিকে, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল হাইকোর্ট। আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘আসল ওএমআর শিট শনাক্ত করা না গেলে আদালত বাধ্য হবে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিতে।' তাঁর নির্দেশ, ওএমআর শিটের আসল ডেটা খুঁজে বের করতে হবে সিবিআইকে। ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট কোথায় রয়েছে, তার হদিশ শুরু করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের অতিরিক্ত রিপোর্ট দিয়ে সংক্ষেপে স্পষ্ট করে জানাতে হবে নিয়োগে কীভাবে, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে তৎকালীন বাম আমলে প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তার ভিত্তিতে ২০১০ সালে পরীক্ষা হয়। পরের এক বছরের মধ্যে বেশিরভাগ জেলার নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও চারটি জেলায় নিয়োগ হয়নি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও।মালদা ছিল।তালিকায়। যা নিয়ে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে।আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে ব্যাপক অস্বচ্ছতার অভিযোগে ২০১২ সালে রাজ্য সরকার চার জেলার নিয়োগের পরীক্ষা বাতিল করে দেয়।তৎকালীন শিক্ষাসচিব বিক্রম সেনের নির্দেশে ওই চার জেলার ক্ষেত্রে যেসব পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদেরই পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরে যা নিয়ে ফের মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। অবশেষে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেই মামলারই নিষ্পত্তি হল চাকরি প্রার্থীদের বক্তব্য, 'আদালতের নির্দেশে শাপমুক্ত হল।'
অন্যদিকে, ২০১৪ সালের টেটে কারচুপির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। রাহুল চক্রবর্তী-সহ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি ভাবে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রাথমিকের ওএমআর শিট মামলাগুলি শুনেছিলেন হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় মামলাগুলি যায় বিচারপতি মাহার এজলাসে।
মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা জানান, এই মামলায় সিবিআই (CBI) এর অনেক রিপোর্ট এজলাসে আসেনি। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ওই সব রিপোর্ট এজলাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে, আদালত জানিয়েছে, পর্ষদের দাবি সব ওএমআর শিট ডিজিটাইজড ডেটা হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে হেমন্ত চক্রবর্তী নামে এক পরীক্ষার্থীকে OMR আদালতের প্রতিলিপিও দেওয়া হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, সেক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞান বলছে, ডেটা সহজে নষ্ট হয় না। এমনকী, মুছে ফেললেও তা পুনরুদ্ধার সম্ভব। তাই ওএমআর শিটের ডেটাও পাওয়া যেতে পারে।
বিচারপতি জানান, ওই সব ডেটা বা তথ্য সিবিআইকে খুঁজে বের করতে হবে। হার্ডডিস্ক, অন্য কোনও সূত্র বা আবার প্রয়োজনে পর্ষদও অফিসেও যেতে পারবে সিবিআই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.