Bengaluru Cafe Blast : বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে কান্ডে বাংলা যোগ! দিঘার হোটেল থেকে ধৃত দুই ISIS জঙ্গি। দুই জঙ্গি ব্যবহার করতো হিন্দু নাম - Probaho Bangla

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪

Bengaluru Cafe Blast : বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে কান্ডে বাংলা যোগ! দিঘার হোটেল থেকে ধৃত দুই ISIS জঙ্গি। দুই জঙ্গি ব্যবহার করতো হিন্দু নাম

Bengaluru Cafe Blast, Abdul Mothin Ahmed and Musabhir Hossain Sajib


বেঙ্গালুরু:
বেঙ্গালুরু ক্যাফেতে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে কলকাতা তথা বাংলা যোগ। বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড-সহ দু'জনকে শুক্রবার ভোরে নিউ দিঘা থেকে গ্রেফতার করল এনআইএ (NIA)। বিস্ফোরণ কাণ্ডের এই দুই চক্ৰী কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএস (ISIS)-র সঙ্গে যুক্ত বলে NIA মনে করছে।


ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাবেন তদন্তকারী -রা। ধৃত দুই জঙ্গির নাম আবদুল মথিন আহমেদ ও মুসাভির হোসেন সাজিব।

কলকাতা অত্যন্ত নিরাপদ শহর, এই দাবি নিয়মিত করে তৃণমূল। অথচ সেই কলকাতাতেই লুকিয়ে ছিল বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফেতে বিস্ফোরণ কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড-সহ দুই জঙ্গি। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, 'নিরাপদ' কলকাতাতেই জঙ্গি ঠাঁই?ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বড়ো কথা, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই দুই জঙ্গি গত ২৮ দিন ধরে কলকাতা তথা রাজ্যের নানা প্রান্তে আত্মগোপন করে ছিল। কিন্তু কলকাতা পুলিশ বা রাজ্য পুলিশের কাছে সেই খবর ছিল না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের সোর্স নেটওয়ার্কও।

গত ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের পর এই  দু'জনকে হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা অবশেষে নিউ দিঘা থেকে তারা এনআইএ-র জালে ধরা পড়ল। জাল আধার কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিচয়পত্র হিসাবে ব্যবহার করে তারা হোটেলে রুম নিয়েছিল।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মার্চ প্রথমে কলকাতার লেনিন সরণির একটি হোটেলে উঠেছিল দুই সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি। কিন্তু মাত্র একদিনের জন্য কলকাতায় ছিল মুসাভির ও আবদুল। এরপর গত ২৮ দিন ধরে বাংলায় ঘুরেছে দু'জন। এমনকী খিদিরপুরেও এরা ডেরা বাঁধার চেষ্টা করেছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

লেলিন সরণির যে হোটেলে ওই দু'জন ছিল,  সেখানকার ওয়েবক্যামের ছবি থেকে তাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ১৩ মার্চ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দুই অভিযুক্ত সেখানে গিয়ে একটি রুম নেয়। তাদের জন্য ৮ নম্বর ঘরটি বরাদ্দ করা হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষ -কে দু'জন জানায়, তারা দার্জিলিং থেকে আসছে এবং কলকাতা থেকে চেন্নাই যাবে। দৈনিক সাড়ে ৭০০ টাকায় ঘর নিয়েছিল তারা।এরপর কলকাতা থেকে নিউ দিঘায় গিয়ে তারা হোটেলে ওঠে। 'হোটেল আয়ুশ ইন্টারন্যাশনাল'-এ উঠেছিল ওই দু'জন। বিঘ্নেশ ওরফে সুমিত নামে ডুয়ো আধার কার্ড বানিয়েছিল আবদুল। অন্যদিকে মহম্মদ জুনের সাজিব নামে ভুয়ো ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়েছিল মুসাভির। এমনটাই সূত্রের খবর।

নিউ দিঘার হোটেল কর্মীরা জানিয়েছেন, ওই দু'জন সমুদ্রে স্নান করার পাশাপাশি রেস্তোরায় চুটিয়ে খাওয়া-দাওয়াও করেছিল। কিন্তু কেউ কিছুই টের পায়নি।


ধৃত ২ জনের মাথার দাম ছিল ১০ লক্ষ টাকা করে। NIA মনে করছে, বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণের ঘটনায় কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন আইএসের যোগ থাকতে পারে।

জানা গিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই হোটেলটিতে এনআইয়ের আধিকারিকরা রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এরপর হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রুম নম্বর জেনে তাদের ধরা হয়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই দিঘাজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। গোটা বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল। রাষ্ট্রবিরোধী একটি সরকার এখানে ক্ষমতায় রয়েছে।' তবে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘এ-সংক্রান্ত তথ্য আসার দু'ঘণ্টার মধ্যে অপারেশন করা হয়েছে।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ২ সন্দেহভাজন জঙ্গিকে।' এ-বিষয়ে কাঁথি লোকসভার বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। বহুদিন ধরে যে অভিযোগ বিজেপি করছে, সেটাই আজ প্রমাণিত হল।' এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'এটাই এগিয়ে বাংলার নমুনা।' যদিও বিরোধীদের বক্তব্য নস্যাৎ করে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'বেঙ্গালুরুতে যারা বোমা ফেলেছিল, তারা কর্ণাটকের বাসিন্দা। বাংলায় লুকিয়েছিল,দু'ঘণ্টায় ধরে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। বাংলার মানুষ শান্তিতে থাকে বিজেপির সহ্য হয় না।'

গত ১ মার্চ বিস্ফোরণ হয় বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম ক্যাফে। ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছিলেন। ৩ মার্চ তদন্তভার গ্রহণ করে এনআইএ। ওই ক্যাফের সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক কালো রঙের ব্যাগ নিয়ে এসেছিল। তার মুখে ছিল মাস্ক। ওই যুবক এক প্লেট ইডলির অর্ডার করে। খাবার খেয়ে সে বেরিয়ে যায়। তবে কালো রঙের ব্যাগটি টেবিলের নীচে রেখে দেয় সে। মিনিট দশেক পরেই ক্যাফেতে বিস্ফোরণ হয়। তাতে ঝলসে যান বেশ কয়েকজন।

জানা গিয়েছে, মুসাভির-ই ব্যাগে করে আইইডি (IED) বিস্ফোরক রেখে এসেছিল বেঙ্গালুরুর ওই ক্যাফেতে। তবে মাস্টার মাইন্ড ছিল আবদুল মাথিন। কীভাবে বিস্ফোরক রাখা হবে, তারপর কীভাবে মুসাভির সেখান থেকে পালিয়ে যাবে, কতক্ষণ বাদে বিস্ফোরণ হবে, সমস্ত পরিকল্পনা করেছিল আবদুলই। বিস্ফোরণের পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল সক্রিয় রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in the comment box.

Post Top Ad