শরীর গঠনের জন্য প্রোটিনের নানবিধ ভূমিকা রয়েছে।আমাদের শরীরের পেশি তৈরিতে, টিস্যুর নানাবিধ ক্ষয়পূরণ করতে, ত্বক ও রক্ত তৈরি করতে শরীরের প্রয়োজন প্রোটিন। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেই প্রোটিন যেন হয় শরীরের প্রয়োজন অনুসারে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত প্রোটিন থেকেও যেমন শরীরের ক্ষতি হয়, তেমনি প্রোটিন কম হলেও সেটা শরীরের জন্য ভালো নয়। তবে আমাদের অনেকের মধ্যেই প্রোটিন নিয়ে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে, যার বশবর্তী হয়ে আমরা নানাবিধ ভুল কাজও করে ফেলি।অনেকে তো প্রোটিন গ্রহণের মাত্রাই কমিয়ে দেয়। ফলে তার থেকে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়। তাই আজকেই বদলে ফেলুন প্রোটিন-বিষয়ক নানারকম ভুল ধারণা।
কীভাবে বদলাবেন, তা নিয়ে একটা ধারণা দেওয়া হল :
প্রোটিন ইনটেক কম হলেই ওজন কমবে : আপনি যদি কোনও কারণে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা কমিয়ে দেন, তাহলে শরীরের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। আর কেউ যদি ওজন কমাতে চান, তাহলে প্রোটিনের চাহিদা কিন্তু ঠিকমতো পূরণ করতে হবে। আপনার বিএমআই অনুসারে এবং উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আপনি কতটা তাড়াতাড়ি এই ওজন কমাতে চান তার উপরই নির্ভর করছে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা। তবে ওজন কমাতে গেলে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ না হলে ওজন কমানো আরও সমস্যার হয়ে উঠবে। তাই প্রোটিন পুরোপুরি বন্ধ করবেন কি না বা কতটা করবেন তা অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টি বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞেস করে নিন।
অতিরিক্ত প্রোটিন খেলেই কিডনির সমস্যা : দেখুন এই বিষয়টা একটু বিশদে বুঝতে হবে। যাদের ইতিমধ্যেই কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন সত্যিই ক্ষতিকর। তাই যদি আপনার কিডনির কোনও রোগ থাকে তা ক্রনিকই হোক বা অ্যাকিউট, তাহলে আদৌ প্রোটিন সামান্যও চলবে কি না, চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করে নিন।
শাকসবজিতে নাকি প্রোটিন নেই : প্রোটিন বলতে আমরা।আমিয খাবারই বেশি বুঝি, মাছ, মাংস, ডিম। কিন্তু নিরামিষ খাবার যাঁরা খান, তাঁরা এসব না খেয়েই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারেন এবং প্রোটিনের নিরামিষ উৎসও রয়েছে। ডাল, বাদাম, মটর, কাঠবাদাম, সাবুদানা, আলু, সবুজ সবজি, চিয়াসিডস ইত্যাদি থেকে মিলবে আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন। তবে সঙ্গে অবশ্যই মেনে চলতে হবে ব্যালান্সড ডায়েট।
প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট মানেই দারুণ উপকারী : খাবার থেকেই যদি আপনার প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়,তাহলে সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আলাদা করে আর কোনও প্রয়োজন নেই। আপনার উচ্চতা, ওজন, জীবনযাপন পদ্ধতি, পেশা, লিঙ্গ, বয়স ইত্যাদির উপরই নির্ভর করবে কতটা প্রোটিন আপনার প্রয়োজন।
প্রোটিন মানেই পেশিগঠন করা কাজ : প্রোটিনে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড। এই অ্যামাইনো অ্যাসিড শুধু পেশিতে নয়, বরং হাড়, চুল, লিগামেন্ট ও হাড়ের জোড়েও থাকে। এমনকী শরীরের ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা ও খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএলের মাত্রা সবই নির্ভর করে প্রোটিনের উপর। সঙ্গে শরীরের অনাক্রমণ্যতা বাড়ায় প্রোটিন, রক্তশর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সুতরাং সমগ্র শরীরের জন্যই প্রোটিন দায়ী। অতএব কতটা খাবেন, কী খাবেন পুষ্টিবিদের সঙ্গে কথা বলে নিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.