অভিজিতের গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, এ-ব্যাপারে তাঁর কাছে সুনির্দিষ্ট খবরও রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তাঁর আরও দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে সেই চেয়ারে নিজের কোনও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত' আত্মীয়কে বসাবেন মমতা ব্যানার্জি। অর্থাৎ নাম না করে তিনি তৃণমূলের এক অন্যতম শীর্ষ নেতার কথাই যে বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘যেভাবে একের পর এক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে, তাতে মমতা ব্যানার্জি বেশিদিন মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না।' যে-সময়ে তিনি কথাটি বলেছেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিগত কয়েক বছর ধরে একের পর এক দুর্নীতির চাপে বেসামাল হয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চূড়ান্ত রায়দান করবে কলকাতা হাইকোর্ট। এছাড়া কয়লা পাচার, গোরুপাচার-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। এই পরিস্থিতিতে অভিজিৎ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ নিয়ে যে-দাবি করলেন, তাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
কয়েক মাস আগে তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। যদিও বিষয়টিকে মমতা-অভিষেকের দ্বন্দ্ব বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করে। কিন্তু তৃণমূল কখনওই সেই দাবি মানেনি। তবে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করেন, অভিষেকের অনুগামীরা তাঁকে আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে দেখতে চাইছেন। তবে এই ‘আগামী দিনে' কথাটিকে অনেকেই আপেক্ষিক বলে মনে করেন। সেই সময় কবে আসবে, তা নিয়ে নানা তত্ত্ব ও বিতর্ক রয়েছে।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে অভিষেক একাধিকবার বলেছেন, তিনি কখনওই মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসতে আগ্রহী নন। তিনি সংগঠনের কাজ করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী, একথা তাঁকে বহুবার বলতে শোনা গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও বিষয়টি নিয়ে জল্পনা থেমে থাকেনি। এই আবহের মধ্যে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যেভাবে কারও নাম না করে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঘটনা হল, একের পর এক ওপিনিয়ন পোল স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে এবার বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে গতবারের থেকেও ভালো ফল করবে। সেক্ষেত্রে সংখ্যাটা যদি ২৫ বা তার বেশি হয়, তৃণমূল যে অসম্ভব চাপে পড়ে যাবে, সেটা স্পষ্ট। আর সেই
সমস্ত সম্ভাবনা বিচার-বিবেচনা করেই অভিজিৎ এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যে চর্চা চলবে, সেটা বলাই যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.