কলকাতা : হাসপাতালে পশ্চিমবঙ্গের ভাষার জায়গায় ব্যবহার করা হলো বাংলাদেশের শব্দ। এই রাজ্যে পানীয় জলকে বাংলায় ‘জল’ বলা হয়। বিদ্যাসাগরের বাংলা ভাষাতে জল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জলকে জল বলেছেন পানি বলেননি। যেখানে বাংলাদেশে বা এই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় বলেন ‘পানি’। কিন্তু রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যখন জল বলেন, তখন একটি সরকারি হাসপাতালের সতর্কবাণীতে পানি শব্দটি এল কেন!
ঘটনাটি ঘটেছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। যেখানে জরুরি বিভাগের সামনে একটি বোর্ডে বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা রয়েছে, "জলাতঙ্ক প্রতিরোধে বিড়াল, কুকুরের মতো প্রাণী কামড়ালে ক্ষতস্থান সাবান ‘পানি’ দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।" এই শব্দ দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ রাজ্যের বিজেপি নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের শাসকদল এভাবে ধর্মীয়
মেরুকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। কেউ আবার বলছেন, পশ্চিমবঙ্গকে এভাবে বাংলাদেশ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
জল, না পানি? পশ্চিমবঙ্গে কী বলা হয়? এই নিয়ে বিতর্ক।সাধারণ ভাবে রাজ্যের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল গুলিতে প্রচুর বাংলাদেশি রোগী চিকিৎসা করাতে আসেন। সোমবার এই বেলেঘাটাতেই একজন বাংলাদেশের নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে আবার এই দেশে এসে কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান। যদিও সেই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে অনেক ডাক্তারের মনে। কারণ তাঁদের বক্তব্য, এভাবে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু সেই পর্যন্ত না হয় ঠিক আছে, তাবলে শুধুমাত্র সংখ্যালঘুদের ভাষার ব্যবহার সরকারি হাসপাতালে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য (Soumik Bhattacharya) বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ভাষা বদল করে একে বৃহত্তর বাংলাদেশ তৈরির চক্রান্ত চলছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে সরকারি হাসপাতাল পর্যন্ত সর্বত্র ভাষা বদল করা হচ্ছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের একটা বড়ো ভূমিকা আছে।'
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা (Rahul Sinha) বলেন, ‘ভোটের রাজনীতির স্বার্থে এভাবে ধর্মীয় মেরুকরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। হিন্দিতে পানি বলা হয়, বাংলায় একমাত্র কিছু বাঙালি মুসলিম পানি বলেন। কিন্তু সেটা সর্বস্তরের বাংলা নয়। এই সরকার বেশিদিন থাকলে রাজ্য বাংলাদেশে পরিণত হবে।'
এদিকে, সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) বলেন, “পানি লেখা থাকলে দোষ কোথায়? আমরা তো বুঝতে পারছি ওটা জল।' এই নিয়ে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘হয়তো ওটা ভুলবসত হয়ে গিয়েছে। আমি বদলে দিতে বলছি।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.